সাভারে টিসিবির পণ্য কিনতে গিয়ে হাত ভেঙে হাসপাতালে নারী

64
স্টাফ রিপোর্টার : সাভারে কম মূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে যাওয়া দুই নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শফিকের বিরুদ্ধে। আহত হয়ে ওই দুই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টারদিকে সাভার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নামা বাজারের পঞ্চবটী আশ্রমে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক নারীর হাত ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সাভার পৌরসভার কাউন্সিলরের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়।
ভুক্তভোগী নারীরা হলেন-সাভারের ওয়াবদা রোডের স্বামী পরিত্যক্তা বিউটি (৩৫) ও হোসনে আরা বেগম (৫০)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
হামলার শিকার বিউটি বলেন, আমি স্বামী পরিত্যক্তা। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমার চলতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের জন্য আজই প্রথম স্লিপ (টোকেন) পেয়েছি। কোনো দিন যাইনি। আজ গিয়ে দেখি মুদি ব্যবসায়ীরা বস্তায় বস্তায় পণ্য নিয়ে যাচ্ছে। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও পণ্য কিনতে পারিনি। আমাদের পণ্য কেনার সুযোগই দেওয়া হয়নি। পরে আমরা বলেছি আমাদের স্লিপ দেওয়া হয়েছে আমরা পণ্য চাই। স্লিপ অনুযায়ী পণ্য বিতরণ করলে তো আমরাও পাব। এসব কথা বললে শফিক নামে এক ব্যক্তি আমাদের ওপর চড়াও হন। পরে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর শুরু করেন। এ সময় শফিকের স্ত্রী বাঁশ দিয়ে আমার হাতে আঘাত করলে আমার হাত ভেঙে যায়।
তিনি বলেন, গরিব বলেই আমাদের ওপর এই অত্যাচার করার সাহস পেয়েছে।
আহত অপর নারী হোসনে আরা বলেন, আমাকে পেছন থেকে কে যেন ধাক্কা দেয়। আমি পড়ে গেলে শফিক ও তার স্ত্রী আমাকে মারধর করে। এ সময় শফিক আমার বুকে লাথি মারে। পরে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছি। আমরা সরকারের ভর্তুকি মূল্যে পণ্য কিনতে গিয়েছিলাম স্লিপ নিয়ে। তারপরও আমাদের মারধর করা হলো।
এ ব্যাপারে শফিক বলেন, আমার মাল হলো ১৩০০ প্যাকেট। আমি স্লিপ দিয়েছি ১২০০। অনেক পরিচিত ব্যক্তি থাকে তারা এসে স্লিপ ছাড়াই মাল চায়। তাদের আমাকে মাল দিতে হয়। এই ১২০০ স্লিপের মাল আমি বিতরণ করেছি। কিন্তু আমার মাল শেষ হলেও স্লিপ শেষ হচ্ছিল না। এর কারণও আমি বুঝি না। যারা পায়নি তাদের বলেছি যে এরপরের বার তাদের দেওয়া হবে। কিন্তু কিছু লোক মাল নিয়েই যাবে, নাছোরবান্দা। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ওই নারী ইট নিয়ে আমাকে ধাওয়া দিলে মাচার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে হাত ভেঙে যায়। আমি কাউকে মারধর করিনি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।
এ ব্যাপারে সাভার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক মোল্লা বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে বিষয়টি শুনেছি। এখানে ১০০০ জনের পণ্য ছিল। প্রায় তিন থেকে ৪ হাজার লোক পণ্য কিনতে এসেছিলেন। পাবলিক ফাংশন তো একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
টিসিবির ডিলার সিরাত ট্রেডিংয়ের মালিক মো. সিরাত বলেন, মারামারি হয়েছে এ ধরনের কিছু আমি শুনিনি। আমাদের ১০০ মাল বিক্রি করা বাকি আছে। হামলার ব্যাপারে আমি কিছু শুনিনি। আজকে আগের প্যাকেজের সঙ্গে ছোলার দাম যোগ হবে। আজকের প্যাকেজে ছিল দুই কেজি ডাল, দুই লিটার তেল, চিনি ও ছোলা। আমরা বাকি ১০০ প্যাকেট কাল গিয়ে বিক্রি করবো, যদি ওনারা (কাউন্সিলর) না দেয়।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।