আলোচিত কিশোর গ্যাং ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম সহযোগী বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু (৩১) জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় দ্বিগুণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সম্প্রতি মাদক কারবারকে কেন্দ্র করে ও পূর্ব শত্রুতার জেরে ধরে রাজু (২৫) নামে এক মাদক কারবারিকে টুন্ডাবাবু ও তার সহযোগীরা কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ ঘটনায় মামলার পর টুন্ডা বাবুকে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২ ও র্যাব-৬।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারকে সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। টুন্ডা বাবু আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ৫ মে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেগে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। তিনি মূলত, কব্জিকাটা আনোয়ারের অনুপস্থিতিতে এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে আরও দ্বিগুণ বেগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। এরপর গতকাল বুধবার (২ জুলাই) টুন্ডা বাবুকে নড়াইলের লোহাগড়া থানাধীন সি অ্যান্ড বি বাজার এলাকা থেকে যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, টুন্ডা বাবু মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত হন। তিনি কব্জিকাটা আনোয়ারের নির্দেশে মোহাম্মদপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, ভূমি দখল, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির প্রস্তুতিসহ ১০টির অধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি বিভিন্ন মেয়াদে একাধিকবার কারাভোগ করেছেন।
সাধারণত দিনের বেলায় তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কম জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল, ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করত এবং রাত গভীর হলেই বাসাবাড়ি, ফ্ল্যাট ও গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নিত।
র্যাব-২ অধিনায়ক বলেন, গত (২৯ জুন) আদাবর থানা এলাকায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী রাজু (২৫)-কে টুন্ডা বাবু ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ৩০ জুন আদাবর থানায় টুন্ডা বাবু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। মামলার সূত্র ধরে, বুধবার রাতে নড়াইলে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে টুন্ডা বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।