বৃহস্পতিবার, 9 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ, হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াত আমিরকে অব্যাহতি


লালমনিরহাট সংবাদদাতা : লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির হাছেন আলীর বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাছেন আলীকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শনোর নোটিশ দিয়েছেন হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা।

অন্যদিকে হাছেন আলীকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর পরই বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা জামায়াতের আমির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জেলা কমিটি।

জামায়াত নেতা হাছেন আলী চলতি বছর ১৩ মে থেকে হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।


জানা গেছে, হাতীবান্ধা মডেল কলেজ বেশ কিছুদিন আগে এমপিওভুক্ত হওয়ার পরে সেখানে অধ্যক্ষের দাবিদার হাছেন আলীসহ ৪ জন। এনিয়ে অধ্যক্ষ দাবিদার ৪ জনেই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ফলে সরকার ঘোষিত এমপিও’র সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলেজটির শিক্ষক কর্মচারীরা।

তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে চলতি বছর ১৩ মে উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা।


কিন্তু বেতন ভাতা পেতে নতুন কয়েকজনের নিয়োগ দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ১৩টি ফাইল পাঠিয়ে সেগুলোর অনুমোদন বের করেন হাছেন আলী।
এতে কলেজটির সভাপতি হিসাবে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ওই ১৩টি ফাইলে ইউএনও স্বাক্ষর করেননি বলে জানিয়েছেন হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা।

এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীকে পাঠানো হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়েছে, ‘নিম্ন স্বাক্ষরকারীকে না জানিয়ে স্বাক্ষর জাল/স্ক্যান করে ১৩টি ফাইল ইনডেক্সের জন্য প্রেরণ করেছেন মর্মে জানতে পেরেছি।


আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হলো।’
বিষয় স্বীকার করে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু আমি স্বাক্ষর করিনি, সেহেতু আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ইনডেক্সের জন্য পাঠানো হয়েছে। সে কারণেই এটা তো জাল বলাই যায়। ওই কলেজের সভাপতি হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করছি। এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।


জবাব পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীর মোবাইল ফোনে কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে জামায়াতের উপজেলা আমীর হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পর পরেই হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে দলীয় ফোরামের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে হাছেন আলীকে উপজেলা জামায়াতের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমীরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবু তাহের উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীকে দলীয় পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করলেও কি কারণে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি। তবে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) লিখেছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে হাছেন আলীকে অব্যাহতি দিয়ে হাতীবান্ধা উপেজলা সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

সর্বাধিক পঠিত