ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিগ্রামে গ্রুপকলে কথা বলা নিয়ে চাঁদাবাজি চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও দলীয় প্রধান পালিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত দলটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংকট নিয়ে মুখ খুলেছেন দলটির একাধিক নেতা।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮-কে জানিয়েছে, দলটি এখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। টেলিগ্রামে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার নামে চাঁদাবাজি চলছে, বিভিন্ন অননুমোদিত টেলিগ্রাম গ্রুপ গজিয়ে উঠেছে। এসব নিয়ে নেতাদের অনেকে চরম অস্বস্তিতে আছেন।
এ ছাড়া এসব টেলিগ্রাম গ্রুপে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এসব গ্রুপের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা ও রাজনৈতিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন তারা।
পতিত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংকট নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ-১৮ এ অনিন্দ্য ব্যানার্জির করা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার প্রধান প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে টেলিগ্রাম। এসব গ্রুপে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত সদস্য আছে। প্রতিদিন রাত ৯টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দীর্ঘ আলোচনাসভা চলে এসব গ্রুপে। এতে অংশ নেন কেন্দ্রীয় নেতা, সংসদ সদস্য (বর্তমান ও সাবেক) এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিউজ১৮-কে জানিয়েছে, শেখ হাসিনা যখন নিজে এসব সভায় যুক্ত হন, তখনও কে তার সামনে কথা বলবেন তা নির্ধারণে টাকা লেনদেন হয়।
আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজ১৮-কে বলেন, ওবায়দুল কাদেরকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি একাধিক টেলিগ্রাম গ্রুপ খুলে নিজেকে জোর করে প্রাসঙ্গিক রাখছেন। এসব গ্রুপ আসলে দলীয় কল্যাণে নয়, বরং অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির জন্য।
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, সংসদ সদস্য, এমনকি সাবেক মন্ত্রীদের কাছ থেকেও টাকার বিনিময়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান ওই নেতা।
ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে কয়েকটি সূত্র ভারতীয় এ গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের টেলিগ্রামকে নিজের প্রধান রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত করেছেন। তিনি প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রুপে জোরালো বক্তব্য দিচ্ছেন। ঢাকা ঘেরাওয়ের ডাক দিচ্ছেন। কিন্তু তার কথায় সময়সূচি বা বাস্তবধর্মী কোনো পরিকল্পনার ছাপ নেই।
তারা আরও জানান, ওবায়দুল কাদের এখন ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদিন নিজের টেলিগ্রাম গ্রুপে বক্তব্য দেওয়ার সময় নির্ধারণ করেন। সেখানে তিনি কৌশলের চেয়ে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টায় মরিয়া থাকেন।