স্টাফ রিপোর্টার : গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা উদ্ঘাটনের নিমিত্তে একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর সেকশন ৩ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিককে সভাপতি করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের লক্ষ্যে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক সরদার নূরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গোপালগঞ্জের সহিংস ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের কার্যপরিধি:
১. উদ্ভূত ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ উদ্ঘাটন করা।
২. জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জনসভায় আক্রমণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠনকে চিহ্নিত করা।
৩. সহিংস ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান।
৪. সহিংস ঘটনাকালীন জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা বিশ্লেষণপূর্বক মতামত প্রদান।
৫. ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।
তদন্ত কমিটির বরাত দিয়ে প্রেস উইং জানায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বনির্ধারিত জনসভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় কারফিউ জারি করা হয় এবং ইন-এইড-টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন।
প্রেস উইং আরও জানায়, তদন্ত কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব প্রকার সহায়তা প্রদান করবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে।কমিশন গোপালগঞ্জের সংঘটিত বিষয়গুলোর ওপর ৩ সপ্তাহের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে।