ফুলকি ডেক্স : তিন জেলায় পদযাত্রা স্থগিত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। খাগড়াছড়িতে পদযাত্রা শেষে সোমবার বিকেল ৫টায় ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পদযাত্রা ও পথসভা কর্মসূচি পালনের নির্ধারিত সময় ছিল এনসিপির। কিন্তু উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে দলটির সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। আজ ও মঙ্গলবার নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রা ও পথসভা কর্মসূচি পালনের নির্ধারিত দিন ছিল।
সোমবার ফেনী না গিয়ে মাইলস্টোনের আহত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে ঢাকায় রওনা দিয়েছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিন বিকেলে ফেনী শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া মোনাজাত শেষে এনসিপির সদস্য জাহিদুল ইসলাম সৈকত বলেন, মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় দুই দিন জুলাই পদযাত্রার কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য ঐক্য ও সম্প্রীতির বিকল্প নেই
পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য ঐক্য ও সম্প্রীতির বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘পাহাড়ে অনেক জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। এসব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অনেক ধরনের দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা ক্ষেত্রে পাহাড়ি ও বাঙালি– উভয় জনগোষ্ঠীই বঞ্চনার শিকার। তাই পাহাড়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। একমাত্র সম্প্রীতির মাধ্যমেই পাহাড়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।’ ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে সোমবার বিকেলে খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরের মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি বহু ভাষা ও বহু সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে প্রত্যেক নাগরিক মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান ধর্মের সঙ্গে ধর্মের, জাতির সঙ্গে জাতির, ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে ইসলামের দ্বন্দ্ব লাগিয়ে রেখেছিল। তাই এসব থেকে জাতিকে মুক্ত করতে নতুন সংবিধান তৈরি করা হবে।’
আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক মনজিলা সুলতানা ঝুমা প্রমুখ।
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা খাগড়াছড়িতে পৌঁছান। শহরের মহাজনপাড়া এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বরে শেষ হয়। সমাবেশ শেষে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও আহতদের সুস্থতায় দোয়া পরিচালনা করেন এনসিপির সদস্য মুফতি ইনজামুল হক।
এনসিপির সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকে খাগড়াছড়িতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
ওয়াসিম আকরামের কবর জিয়ারত
এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের কবর জিয়ারত করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্য নেতারা। সোমবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বাঘগুজারা এলাকায় গিয়ে তারা ওয়াসিমের কবর জিয়ারত করেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজাউদ্দিন বলেন, ‘সকালে নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত করেছেন। তাঁর কবর জিয়ারত করাটা আমাদের সাংগঠনিক কমিটমেন্ট ছিল। যত বাধাই আসুক, আমরা আমাদের সাংগঠনিক কমিটমেন্ট রক্ষায় বদ্ধপরিকর। এনসিপি নেতারা কবর জিয়ারত শেষে চট্টগ্রামের উদ্দেশে পেকুয়া ত্যাগ করেন।’
পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, এনসিপি নেতারা কবর জিয়ারতের সময় পেকুয়া থানা পুলিশের একটি দল তাদের সঙ্গে ছিল। কবর জিয়ারত শেষে তারা নিরাপদে পেকুয়া ত্যাগ করেছেন।