শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে ঠিক যেভাবে শেষ করেছিলো, সেভাবেই মিরপুরে শুরু করলো বাংলাদেশ! পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করলো লিটন দাসরা। চলতি বছর মে মাসে পাকিস্তানে গিয়ে পাত্তা পায়নি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এবার নিজেদের মাঠে শক্তি দেখালো বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১১০ রানে অলআউট করে দিয়ে মাত্র ১৫.৩ ওভারে ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে ফেলে লিটনরা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের রহস্যময় উইকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লিটন। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে যথার্থ হয়েছে সেটি প্রমাণ করতে বেশিক্ষণ সময় নিলেন না বাংলাদেশি বোলাররা। মোস্তাফিজুর রহমান-তাসকিন আহমেদের দারুণ বোলিংয়ে পাকিস্তান ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানে অলআউট হয়।
সহজ লক্ষ্য। কিন্তু মিরপুরের রহস্যআবৃত উইকেটে কখনও কখনও সহজ লক্ষ্যটাও কঠিন হয়ে যায়। সেই শঙ্কা জেগেও ছিল। ৭ রানে টপ অর্ডার দুই ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসকে ফিরিয়ে দারুণ শুরু পায় পাকিস্তান। ম্যাচের তৃতীয় ওভারে লিটনকে আউট করার পর ক্রিজে নামেন তাওহীদ হৃদয়। সালমান মির্জার নো বলে মোমেন্টাম পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ওভারের তৃতীয় বলে হৃদয় ছক্কা হাঁকান। তখনও দলের সর্বোচ্চ রান করা ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন হাত খুলে খেলা শুরু করেননি। চতুর্থ ওভারে সাইম আইয়ুবকে লং অন দিয়ে বিশাল ছক্কা মেরে শুরু হয় তার ঝড়। এরপর তো পাকিস্তানের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন বাংলাদেশের এই ওপেনার।
তৃতীয় উইকেটে ইমন ও হৃদয় মিলে গড়েন ৭৩ রানের জুটি। ৩৭ বলে ৩৬ রান করে আব্বাস আফ্রিদির বলে আউট হন হৃদয়। বাকি পথটা অনায়াসেই পাড়ি দেন জাকের আলী ও ইমন। সালমানকে লং অন দিয়ে চার মেরে ২৭ বল আগে ৭ উইকেটে জয়ের বন্দরে দলকে নিয়ে যান জাকের। বাংলাদেশের ওপেনার ইমন ৩৯ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে জাকের ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে মির্জা দুটি এবং আব্বাস একটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে ৯ ম্যাচ পর টস জেতে বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান লিটন। এরপর যেন সফরকারীদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠলেন বাংলাদেশি বোলাররা। মেহেদীর প্রথম ওভারেই ফখর জামানকে ফেরানোর দারুণ সুযোগ এসেছিলো। কিন্তু তাসকিন শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচটি ছেড়ে দেন। সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান ফখর। তার ৪৪ রানেই মূলত একশ রানের গন্ডি পেরুতে পারে সফরকারীরা।
তবে প্রথম ওভারে ফখরকে ফেরাতে ব্যর্থ হলেও চাপ অব্যহত রাখতে পারে বাংলাদেশ। তাসকিন-মোস্তাফিজদের তোপে চাপে পিষ্ট হয়ে পাওয়ার প্লেতেই হারায় চার উইকেট। শুরুর ছয় ব্যাটারদের মধ্যে পাঁচজনই সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হয়েছেন। খুশদিল শাহ ২৩ বলে ১৭ এবং আব্বাস ২৪ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে দলের রানকে একশতে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছেন। সর্বোচ্চ ৪৪ রান আসে ফখরের ব্যাট থেকে। ৩৪ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কার ইনিংস খেলেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। বাংলাদেশের বোলাররা এদিন কেবল ভালো বোলিংই করেননি, ফিল্ডাররা ছিলেন দুর্দান্ত। দারুণ ফিল্ডিংয়ে দুটি রান আউটও আদায় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান ১১০ রান করতে পারে।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজ ছিলেন অসাধারণ। ৪ ওভারে ২৪ বলের মধ্যে ১৮টি দিয়েছেন ডট। ৬ রান খরচায় তার শিকার দুটি উইকেট। তাসকিন ২২ রান খরচ করে নেন তিনটি উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান ও তানজিম হাসান সাকিব।