গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুর মহানগরীর পূবাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ আলীকে আটক করেছে পূবাইল থানা পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাতে পূবাইল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে নগরীর ৩৯ ওয়ার্ডের হায়দরাবাদ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। মোহাম্মদ আলী ২০ জুলাই আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল কর্মসূচি সফল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে সংঘটিত করা এবং সহিংসতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর আটকের খবরে এলাকায় জনমনে আনন্দ ও স্বস্তি এসেছে।স্থানীয়রা দাবি, আইনের কোন ফাঁকফোকর ব্যবহার করে যেন এই ফ্যাসিবাদী নেতা ছাড় না পান সেদিকে যেন প্রশাসন নজর রাখে।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ আলী সাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অন্যতম সহযোগী।গাজীপুরে হাসনাতের ওপর হামলা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা ও হত্যাকাণ্ড হয় সে ঘটনায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া গত বছরের জুলাই মাসে জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে উত্তরায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয় তাতে গাজীপুরের প্যানেল মেয়র মাসুদুল হাসান বিল্লালের সঙ্গে অংশ নেওয়ার অভিযোগও আছে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে।
মোহাম্মদ আলী গাজীপুর সিটির ৩৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তিনি এর আগে যুবলীগের রাজনীতি করতেন। পূবাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ছিলেন।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ আমলে তার যন্ত্রণায় বিএনপির বহু নেতাকর্মী মামলা ও হামলার শিকার হয়ে বাড়িতে থাকতে পারেনি। এলাকায় একাধিক মানুষের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে সুদি ব্যবসায় জড়িত মোহাম্মদ আলী। সুদি ব্যবসা করে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। তার কাছ টাকা নিয়ে সুদ দিতে দিতে বহু পরিবার নি:স্ব হয়েছে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর জামায়াতের একটি অংশের সঙ্গে সখ্য গড়েন মোহাম্মদ আলী।তারা তাকে রক্ষা করে চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপি- জামায়াতের একটি অংশ তাকে ছাড়ানোর জন্য থানায় তদবির করছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, ফ্যাসিস্ট নেতা মোহাম্মদ আলী যেন ছাড়া না পান।
আটকের বিষয়টি জানতে চেয়ে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলামকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। ডিউটি অফিসার হাফিজ জানান, লকআপে সন্দেহভাজন হিসাবে মোহাম্মদ আলীকে রাখা হয়েছে।
আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (অপরাধ দক্ষিণ) মহিউদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী আটকের বিষয়টি শোনেছি; বিষয়টি আমি দেখছি।