স্টাফ রিপোর্টার : প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চিঠি লিখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চিঠিতে তিনি বেগম জিয়াকে ‘সংকল্প ও আদর্শনিষ্ঠায় বিরল এক নেত্রী’ উল্লেখ করে তার আদর্শগুলো তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন পথচলা নিশ্চিত করতে এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর ও ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করতে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বেগম খালেদা জিয়া। এর পরপরই এক এক্স পোস্টে শোক জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এরপর তারেক রহমানকে আনুষ্ঠানিক পত্র দেন নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি ভারত সরকারের শোকবার্তা তারেক রহমানের কাছে পৌঁছে দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ‘প্রিয় তারেক রহমান সাহেব’ সম্বোধন করে মোদি লিখেন,‘আপনার মাতা, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন মাননীয়া বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। আপনার এই অপূরণীয় ব্যক্তিগত ক্ষতিতে আমার আন্তরিক সমবেদনা গ্রহণ করুন। তাঁর আত্মা চিরশান্তিতে বিরাজ করুক।
নরেন্দ্র মোদি লিখেন, ‘২০১৫ সালের জুন মাসে ঢাকায় বেগম সাহিবার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ও আলোচনার কথা আমি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে স্মরণ করি। তিনি ছিলেন সংকল্প ও আদর্শনিষ্ঠায় বিরল এক নেত্রী যিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন।’
‘তাঁর প্রয়াণ এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করলেও তাঁর আদর্শ ও উত্তরাধিকার চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। আমি নিশ্চিত যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আপনার যোগ্য নেতৃত্বে তাঁর সেই আদর্শগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবে। একই সঙ্গে তা এক নতুন পথচলা নিশ্চিত করতে এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর ও ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করতে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশের এই এই জাতীয় শোকের মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘যারা ইতিহাসে বরাবরই তাদের অসাধারণ শৌর্য ও মর্যাদার পরিচয় দিয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, তারা তাদের অভিন্ন মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য এবং জাতীয় ঐক্যের বোধ দ্বারা পরিচালিত হয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে এগিয়ে যাবে।’
শেষে তারেক রহমানকে আবারও আন্তরিক সমবেদনা গ্রহণের আহবান জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘আমি সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে এই কঠিন সময় কাটিয়ে ওঠার শক্তি ও ধৈর্য প্রদান করেন। আপনার ভবিষ্যৎ পথচলার জন্য আমার শুভকামনা রইল।’
