মঙ্গলবার, 30 ডিসেম্বর 2025
MENU
#
প্রার্থী মারা গেলে ইসির নির্দেশনা কী
daily-fulki

প্রার্থী মারা গেলে ইসির নির্দেশনা কী


স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন ধরেই শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে জটিল সময় পার করছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করার সিদ্ধান্ত নেন এই নেত্রী। তিনি দিনাজপুর- ৩ (সদর), ফেনী-১ ও বগুড়া-৭ (গাবতলী) এই তিনটি আসন থেকে প্রার্থীতা করতেন।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে এসব আসনের নির্বাচন স্থগিত হবে কি না নির্বাচনি আইনে কি রয়েছে, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।


আইন যা বলছে  


গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ১৭(১) অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন নাই এইরূপ কোনো বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী মৃত্যুবরণ করলে, অনুচ্ছেদ ৯১ঙ এর দফা (২) এর অধীন কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হইলে, রিটার্নিং অফিসার, গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা, সংশ্লিষ্ট নির্বাচন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাতিল করে দিবেন।

যেক্ষেত্রে দফা (১) এর অধীন কোনও নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম বাতিল করা হয়, সেইক্ষেত্রে এই আদেশের অধীন নতুন কার্যক্রম এরূপভাবে শুরু করতে হবে যেন এটা একটি নতুন নির্বাচন; তবে শর্ত থাকে যে, অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের নতুন মনোনয়নপত্র দাখিল করবার বা অনুচ্ছেদ ১৩ এর অধীন পুনরায় অর্থ জমা প্রদানের কোনও প্রয়োজন হবে না।

১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যেক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনও কারণে মনোনয়ন বাছাই বা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম নির্ধারিত তারিখে সম্পন্ন করা সম্ভব না হয়, সেইক্ষেত্রে তিনি উক্তরূপ কার্যক্রম স্থগিত বা মুলতবি করতে পারবেন এবং কমিশনের অনুমোদনক্রমে, গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা, উক্তরূপ স্থগিত বা মুলতবিকৃত কার্যক্রমের জন্য অন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করতে এবং প্রয়োজন হলে, পরবর্তী কার্যক্রমের জন্যও এক বা একাধিক তারিখ নির্ধারণ করতে পারবেন।

এ বিষয় নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “আইনে যেহেতু বলা আছে বৈধ প্রার্থী মৃত্যুবরণ করলে তফশিল বাতিল হবে। সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে এই তফশিলে কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, উনি এখনও বৈধ প্রার্থী হননি। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার অবস্থা বিবেচনায় বিএনপি উনার (খালেদা জিয়া) আসনগুলোতে বিকল্প প্রার্থী রেখেছে। কাজেই এটা নিয়ে সমস্যা হবে না বলে আমি মনে করি।”  

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দিনাজপুর-৩ (সদর) অর্থাৎ সদ্য প্রয়াত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা আসনে সম্প্রতি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক তিনবারের মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম।

এছাড়া ফেনী-১ আসনে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক ও খালেদা জিয়ার নির্বাচনি সমন্বয়ক মুন্সি রফিকুল আলম ওরফে মজনু ও বগুড়া-৭ আসনে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোর্শেদ মিল্টনও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন  রাজনীতিতে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসারত অবস্থায় দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসনের এই প্রয়াণে দেশের রাজনীতিতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু শুধু একটি রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি নয়, বরং একটি যুগের অবসান। গণতন্ত্র, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে তিনি ছিলেন দৃঢ় ও আপসহীন এক নেত্রী। এই রাজনীতিকের চলে যাওয়ায় রাজনীতির ময়দান হারালো এক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর। 
 

সর্বাধিক পঠিত