মঙ্গলবার, 30 ডিসেম্বর 2025
MENU
#
৪২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কারাবন্দি হন ৫ বার
daily-fulki

৪২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কারাবন্দি হন ৫ বার


স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে অনেক ইতিহাসের জন্ম হয়েছিল খালেদা জিয়ার হাত ধরে। একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রাণ হারান ১৯৮১ সালের ৩০ মে। তখনও গৃহবধূ ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে বিএনপি নেতা বিচারপতি আব্দুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হলেও বেশিদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি।


সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ সামরিক শাসন জারি করেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ। 
পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে দলের হাল ধরতে হয়েছিল গৃহবধূ খালেদা জিয়াকে। ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি দলের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিএনপি চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

দীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে তিনবার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। 
শুধু ক্ষমতার চূড়ায়ই ছিলেন না, এই সময়ে তিনি পাঁচবার কারাবন্দি হন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা খালেদা জিয়া তিনবার গৃহবন্দি হন ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে ও ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর।

এরপর ১৯৯১ সালে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া।


তার সময়েই দেশে পুনরায় সংসদীয় ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচনে স্বল্প মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে তার সময়েই সংবিধানে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তিত হয়। পরবর্তী নির্বাচনে এককভাবে ১১৬ আসন পেয়ে সংসদে সর্বৃবৃহৎ বিরোধী দল হয় বিএনপি। আর বিরোধী দলীয় নেতা হন খালেদা জিয়া। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াতসহ চারদলীয় জোট গঠন করে ফের প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া।
সেই মেয়াদ শেষ করেন ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর। 
এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হবেন, এ নিয়ে সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির মধ্য দিয়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ওয়ান-ইলেভেন ঘটে। ওয়ান-ইলেভেনে তৎকালীন সরকারের সময়ে খালেদা জিয়া ২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন। এক বছরেরও বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারামুক্ত হন তিনি।

সবশেষ জনরোষের মুখে পলাতক শেখ হাসিনার সময়ে একটি হয়রানিমূলক মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ওইদিনই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছর কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।

অসুস্থ খালেদা জিয়া দীর্ঘ সময় বিএসএমএমইউতে ভর্তি থাকার পর গুলশানের বাসা থেকে চিকিৎসা নেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিনই তিনি পুরোপুরি মুক্তি পান। এরপর লন্ডনে একবার চিকিৎসা নিতে গেলেও শারীরিক অবস্থার কারণে রাজনীতিতে আর সক্রিয় হতে পারেননি। সবশেষ ২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। 

সর্বাধিক পঠিত