মঙ্গলবার, 16 ডিসেম্বর 2025
MENU
#
সাভারে এক শিল্পপতির কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, প্রতিমাসে চুরি হতো ২ কোটি টাকার গ্যাস
daily-fulki

সাভারে এক শিল্পপতির কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, প্রতিমাসে চুরি হতো ২ কোটি টাকার গ্যাস


স্টাফ রিপোর্টার :  সাভারে চোরাই বাইপাস লাইন করে রপ্তানিমুখী একটি শিল্প কারখানায় আনুমানিক ২ কোটি টাকার গ্যাস চুরি করা হতো। আর কর্মকর্তাদের ধোঁকা দিতে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল নানা ধরনের উপকরণ। গোপন অনুসন্ধান শেষে সেই কারখানায় অভিযান চালিয়ে গ্যাস চুরির বিষয়টি হাতেনাতে ধরেছে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়ার দক্ষিণ গৌরীপুর এলাকায় মিউচুয়াল অ্যাপারেলসের ওয়াশিং প্লান্টে অভিযান চালায় তিতাসের ভিজিল্যান্স টিম। অভিযানে নেতৃত্ব দেন তিতাসের গাজীপুর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগের (সাভার, মানিকগঞ্জ ও আশুলিয়া) ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল আলীম রাসেল।


চুরির ঘটনা উদ্ঘাটন এবং কারখানার গ্যাস সংযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতাসের আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগের (গাজীপুর) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ার পারভেজ।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মিউচুয়াল অ্যাপারেলস ও মিউচুয়াল প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রিয়াদ আরাফাত আমিনকে পাওয়া যায়নি। 
কারখানার মানব সম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মোঃ মিন্টু কারখানায় তিতাসের অভিযান ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার দুপুর থেকে এই কারখানায় অভিযান চলছে। উনারা আমাদের বেশ কয়েকটি চোরা লাইন দেখিয়েছেন। যেখান থেকে গ্যাস চুরি করা হতো বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন।


অভিযানে উপস্থিত তিতাসের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক পরিদর্শনে একটি বাইপাস লাইন ও ভূগর্ভস্থ গোপন অবৈধ রেগুলেটিং স্টেশন সনাক্ত করা হয়। এ সময় কর্মকর্তাদের ধোঁকা দিতে কয়লা চালিত বয়লারটি চালু করা হয়। পরে অনুসন্ধান শেষে সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং অবৈধ বাইপাস লাইন খুলে ফেলা হয়।


গাজীপুর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগের (সাভার, মানিকগঞ্জ ও আশুলিয়া) ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল আলীম রাসেল জানান, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরিমাপ করেছি প্রতি মাসে এই কারখানা থেকে চোরাই লাইন ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি টাকার গ্যাস চুরি করা হতো।


কিভাবে সন্দেহ হলো। আর চুরির বিষয়টি শনাক্ত হলো কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা জানান, এই গ্রাহকের যে পরিমাণ বিল আসার কথা দীর্ঘদিন ধরেই তেমন বিল আসতো না। প্রথমে সন্দেহ হয় এখানে। 


পরিদর্শনকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, গ্যাসের প্রেসার কম থাকায় তারা বাইরে থেকে সিএনজি এনে কারখানা চালাচ্ছেন। কিন্তু সিএনজির জেনারেটার কক্ষে দেখা যায় সবকিছু বিচ্ছিন্ন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কয়লা দিয়ে বয়লার চালান। তাৎক্ষণিকভাবে বয়লার পরিদর্শন করে দেখা যায় বয়লারটি তখনো গরম হয়নি। 
এরপরে শুরু হয় অনুসন্ধান। কারখানার পেছনে বিভিন্ন অংশের খোঁড়াখুরি করে পাওয়া যায়, ভূগর্ভস্থ চোরাই গ্যাস লাইন।


এ ব্যাপারে তাদের ডেকে এনে সরজমিনে বিষয়টি দেখানো হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তিতাসের ভিজিলের টীমকে নানা কৌশলে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। 
খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে গেলে প্রথমে তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। পরে তাদেরকেও ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান কারখানা কর্তৃপক্ষ। 
বিকেল পাঁচটার দিকে চোরাই এবং আসল দুটি সংযোগী বিচ্ছিন্ন করে অভিযান শেষ করে তিতাসের ভিসিলেন্স টীম।

 

সর্বাধিক পঠিত