গবি সংবাদদাতা : গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণে জড়িতদের ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেওয়ায় ও ধর্ষণকাণ্ডে অবহেলার অভিযোগে শিক্ষকের পদত্যাগ চাওয়াকে কেন্দ্র করে নাসিম (২৫) নামে এক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস চত্বরে ও হাসপাতালে দুই দফা মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরআগে, গত ৭ ডিসেম্বর দুই দফায় মারধরের শিকার হন ভুক্তভোগী।
অভিযুক্তরা হলেন-গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাজিব (২৩), ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের তামিম ইকবাল (২৪), সমাজ বিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগের মো. আবির (২৩) ও সোহাগসহ (২৩) অজ্ঞাত ৪-৫ জন। তারা আশুলিয়ার নলাম মির্জানগর এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী নাসিম (২৫) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরের বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী গণ ধর্ষণের শিকার হন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তোলেন। এরই জেরে বিবাদীরা তার সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই জেরে গত ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টারদিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ১ নম্বর থেকে ৪ নম্বর অভিযুক্ত তার ওপর হামলা করে।
তারা এলোপাথাড়িভাবে মারধর করে হাতে, পায়ে, পিঠে, মাথায়, কানে, কাঁধেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে নিলাফুলা জখম করে। আশপাশে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। এ সময় সেখানে থাকা ৫ নম্বর অভিযুক্তসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন তাকে টানাহেঁচড়া করে আবারও মারধর করে। এ সময় তার পায়ে ইট দিয়ে থেতলে দিয়ে নিলাফুলা জখম করে ও তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তিনি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
এদিকে হামলার পরপরই এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও-ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে করা এক মন্তব্যের বিষয়ে রাজিব হোসেন নামে এক নাসিমকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন। কথা বলার এক পর্যায়ে নাসিমকে মারধর শুরু করেন তিনি। এসময় তার সাথে সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরাও নাসিমকে মারধর শুরু করে।
মারধরের ঘটনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাসিম বলেন, ধর্ষণের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ভুক্তভোগী অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও প্রক্টরিয়াল বডির সভাপতিসহ যেসকল শিক্ষক বিষয়টিকে আমলে নেননি, তাদের পদত্যাগ দাবি করে গত কয়েকদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছিল, যার সাথে আমরাও যুক্ত ছিলাম। সেদিনও আমাদের কর্মসূচি ছিল। সেখানে গিয়েই আমি হামলার শিকার হই। আমি এই ঘটনায় বিচার চাই।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল হাওলাদার বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
