নোয়াখালী সংবাদদাতা : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার এক যুবক দ্বিতীয়বার বিয়ে করায় তাকে শিকলবন্দি করে রেখেছেন প্রথম স্ত্রীর পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন যুবকের বাবা।
প্রথম স্ত্রীর দাবি, তাকে না জানিয়ে স্বামী আরও দুই বিয়ে করেছেন। তবে তিন নয়, দুই বিয়ে করেছেন বলে স্বীকার করেছেন শিকলবন্দি ওই যুবক।
উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, বিষয়টি জাহাজমারা তদন্তকেন্দ্র দেখবে।
২৪ বছর বয়সী ওই যুবককে উদ্ধারে স্বজনরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন জাহাজমারা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ খোরশেদ আলম।
স্বামীকে বেঁধে রাখার কারণ জানতে চাইলে প্রথম স্ত্রী বলেন, “তিন বছর আগে তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। আমি দুই বছর ধরে বাবার বাড়িতে থাকি। বাবার বাড়িতে আসার পর স্বামী খোঁজ নিতেন না। পরে জানতে পারি তিনি আরও দুটি বিয়ে করেছেন। এ কারণে স্বজনদের দিয়ে কৌশলে ডেকে এনে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।”
তিনি বলেন, বিয়ের সময় বাবার বাড়ি থেকে এক ভরি স্বর্ণালংকার, এক লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস না যেতেই সংসারে নানা অশান্তি শুরু হয়। স্বামীর আচার-আচরণে সন্দেহ হয়। স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। এ নিয়ে সালিসও হয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। পরে রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যান তিনি।
ওই নারী অভিযোগ, বাবার বাড়িতে যাওয়ার পর দুই বছর ধরে স্বামী তার খোঁজখবর নিতেন না। পরে জানতে পারেন, তার স্বামী আরও দুটি বিয়ে করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে তাকে ধরে এনেছেন বাবার বাড়িতে। স্ত্রী হিসেবে নিজের অধিকার আদায়ে বাধ্য হয়ে এই কাজ করেছেন তিনি।
তিন নয় দুই বিয়ের কথা স্বীকার করে শিকলবন্দি স্বামী বলেন, বিয়ের তিন বছর ধরে কোনো সন্তান হয়নি তাদের। এ নিয়ে কলহ চলছিল। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান। গত এক দেড় মাস আগে তিনি আরেকটি বিয়ে করেন। বিষয়টি জানতে পেরে, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ধরে এনে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রেখেছেন।
শিকলবন্দি যুবকের বাবা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলেকে ধরে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে তিনি গিয়ে দেখেন, ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার রাতে হাতিয়া থানায় একটি অভিযোগ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
