গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আলোচিত নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলার ঘটনায় করা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বাদী। সোমবার দুপুরে বাদী নুরুল হকের শ্যালিকা শিরিন বেগম গোয়ালন্দ আমলি আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন দাখিল করেন। আদালত আবেদন গ্রহণ করে আগামী ২২ ডিসেম্বর এ বিষয়ে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাদী ও আসামিদের মধ্যে আপস-মীমাংসা হওয়ায় শিরিন বেগম মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। নুরুল হকের পারিবারিক সূত্রও আপস-মীমাংসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দ বাজার শহীদ মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে উপজেলা ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে একদল লোক দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শরিয়ত পরিপন্থিভাবে দাফনের অভিযোগ তুলে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় পুড়িয়ে দেয়। এই হামলার ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। হামলায় আহত হয়ে মারা যান রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত।
হামলার প্রায় দুই মাস পর গত ১৩ নভেম্বর শিরিন বেগম ৯৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামজিদ হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেন। এ ছাড়া রাসেল মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা আজাদ মোল্লা ৮ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেন। হত্যাসহ ভাঙচুর, লুটপাট ও লাশ উত্তোলনের অভিযোগে মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ থানার এসআই সেলিম মোল্লা ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আরও একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়। পুলিশ এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
