মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : জমি সংক্রান্ত বিরোধে পুলিশকে পক্ষে ব্যবহার করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক আইনজীবীর সহকারী। ঘটনাটি উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের চরমাধবপুর গ্রামের। বাদী মনির হোসেন (৪১), মৃত মালেক সরদারের ছেলে। তিনি গত ২ নভেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দোলন বিশ্বাসের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত আদালত কোনো আদেশ দেননি বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, চর মাধবপুর এলাকার আমজাদ খানের ছেলে রবিউল ইসলাম ও মামলার বাদী মনির হোসেনের শাশুড়ি রহিমার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি বর্তমানে দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন এবং আদালত ওই জমির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। কিন্তু গত ২ জুলাই রহিমা আদালতের আদেশ অমান্য করে লোকজন নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমি দখলের চেষ্টা চালান। এ সময় রবিউলের দোকানের সামনে বালু ফেলে রাস্তা আটকে দেন তারা। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে বালু সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ঘটনার পর রবিউলের স্ত্রী শারমিন সুলতানা চাঁদনী বাদী হয়ে মনির ও তার শাশুড়ি রহিমাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি শান্তিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আরবীকুল ইসলামের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তিনি তদন্তে উল্লেখ করেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং উভয় পক্ষকে আদালতের মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা যাতে অবনতি না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
এরপর স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশ বৈঠক এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিংগাইর সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুনের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেও উভয় পক্ষকে আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এতে অসন্তুষ্ট হয়ে রহিমার জামাই ও আইনজীবীর সহকারী মনির হোসেন সিংগাইর থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন দাখিল করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মনির হোসেন বলেন, “ঘটনা প্রমাণে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট রয়েছে। কোর্ট এখনো কোনো আদেশ দেয়নি।” অন্যদিকে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম অভিযোগটি ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, “যে বিষয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। থানায় অভিযোগ এলে আমরা নিয়ম মেনে তদন্ত করি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা, যার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
