মঙ্গলবার, 15 জুলাই 2025
MENU
daily-fulki

মিটফোর্ডের ঘটনায় জনগণ একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে লাল কার্ড দেখিয়েছে: জামায়াত নেতা সেলিম উদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার : গণবিরোধিতার কারণে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে দেশের মানুষ অনেক আগেই হলুদ কার্ড দেখিয়েছে। আর মিটফোর্ডের ঘটনায় জনগণ তাদের (বিএনপি) লাল কার্ড দেখানোর কাজ সম্পন্ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের পল্লবীতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত নেতা সেলিম উদ্দিন এ কথা বলেন। দলটির ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন উপলক্ষে এ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি পল্লবী থেকে শুরু হয়ে মিরপুর ১০ নম্বরে গিয়ে শেষ হয়।

মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘তথাকথিত প্রথাগত রাজনীতি দেশ ও জাতিকে কিছুই দিতে পারেনি, বরং এ ধরনের বস্তাপচা রাজনীতি দেশের মানুষকে খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, রাহাজানি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি ও লুটপাট উপহার দিয়েছে। কথিত রাজনীতির ধারক-বাহকেরা রাজনীতির মাধ্যমে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেওয়ার কাজে সব সময় ব্যস্ত থেকেছেন। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে একটি ইতিবাচক ও মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। যার ফলে অপরাজনীতির ধারক-বাহকেরা এখন অসহায় ও এতিম হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন।’

সম্প্রতি বিএনপির নেতা–কর্মীদের দেওয়া কিছু স্লোগানের সমালোচনা করে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘তাদের এখনকার স্লোগান হলো, “দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার”। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, এ স্লোগান বাস্তবায়িত হলে তাদেরই এক দলকে দিল্লি ও অপর দলকে পিন্ডি যেতে হবে। কারণ, রাজাকারের তালিকায় তাদের নাম অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে তাদের নেতিবাচক রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে ইতিবাচক রাজনীতি শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় জনগণ তাদেরকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করবে।’

 

সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের (বিএনপি) হাতে একটা মোক্ষম সুযোগ এসেছিল। ইচ্ছা করলেই তারা তাদের দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং ইসলামি অনুশাসন মেলে চলার জন্য প্রস্তুত করতে পারত। কিন্তু তারা সে পথে অগ্রসর না হয়ে দেশকে চাঁদাবাজের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। তাদের এখনকার স্লোগানই হলো “চাঁদা দিলে পুরস্কার, না দিলে বহিষ্কার।”’

মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দলীয় ইশতেহার প্রকাশ করেছে মন্তব্য করে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘মিটফোর্ডের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা (বিএনপি) তাদের দলীয় ইশতেহারই প্রকাশ করেছে। তাদের দলের চাঁদাবাজি ও দখলদারি নিয়ন্ত্রণ এবং অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই নিজ দলের দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ সর্বপ্রকার অপরাধপ্রবণতা বন্ধ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের নতুন ধারার রাজনীতি শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজনীতির ময়দান থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে হবে।’

পুলিশের উদ্দেশে এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া আপনাদের কাজ। তাই আপনারা জনগণের সঙ্গে আওয়ামী-বাকশালি পুলিশের মতো আচরণ করবেন না। মিটফোর্ডের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ দলীয় কর্মী মেনে নিয়ে নিজেরাই তাদেরকে বহিষ্কার করেছে। অথচ পুলিশ তাদের দলীয় পরিচয় খুঁজে পাচ্ছে না। এসব দালাল পুলিশদের নির্বাচনকালে কোনো দায়িত্বে রাখা যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে।’

এ সময় তিনি দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সুশাসন, ন্যায়, ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠাসহ ৭ দফা দাবিতে আগামী ১৯ তারিখে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ সফল করতে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং পল্লবী জোন পরিচালক অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ‘ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশান অব স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইফসু) সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ। এ ছাড়া রূপনগর থানা জামায়াতের আমির আবু হানিফ, পল্লবী দক্ষিণ থানার আমির আশরাফুল আলম, পল্লবী মধ্য থানার আমির রইসুল ইসলাম পবন, পল্লবী উত্তর থানার আমির মাওলানা সাইফুল কাদের বক্তব্য দেন।


 


News Writer

SB

সর্বাধিক পঠিত