স্টাফ রিপোর্টার : গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনী–২০২৫ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ সময় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আরপিওর সংশোধনীতে ‘না ভোট’ এর বিধান ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘না ভোট’-এর একটা বিধান করা হয়েছে। যেই নির্বাচনে একজন প্রার্থী থাকবে... আপনাদের ২০১৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ১৫৩ বা ১৫৪ টি আসনে একজন প্রার্থী ছিল, সাজানো নির্বাচন ছিল। এই ধরনের নির্বাচন যেন আর না হয়। একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে যারা ভোটার আছেন, তারা ‘না ভোট’ দিতে পারবেন-যে এই প্রার্থী তাদের পছন্দ না। তখন সেখানে আবার নির্বাচন হবে।
ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আরও জানান, সংশোধিত আরপিওতে ইভিএম সম্পর্কিত যেসব বিধান ছিল সেগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে পারবে না-সংশোধিত আরপিওতে সেটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাচনে প্রার্থীদের তাদের দেশি ও বিদেশি সব আয় এবং সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং তা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। ভোটাররা যাতে পরিষ্কার ধারণা পান, প্রার্থী কোন দলের-এজন্য এই বিধান করা হয়েছে।
প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্তদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সংশোধিত আরপিওতে ভোট গণনার স্থানে মিডিয়া থাকতে পারবে-এমন বিধান রাখা হয়েছে।
রাজনৈতিক দলকে চাঁদা বা অনুদান হিসেবে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি টাকা দিলে তা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি চাঁদা দেবেন, তার ট্যাক্স রিটার্নও জমা দিতে হবে।
আগে ভোটকেন্দ্রে গন্ডগোল হলে নির্বাচন কমিশন সেই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করতে পারত-সেই বিধান ছিল। এখন অনিয়মের কারণে নির্বাচন কমিশন চাইলে পুরো নির্বাচনী এলাকার ভোটই বাতিল করতে পারবে-সেই বিধান করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।