স্টাফ রিপোর্টার : বান্দরবান থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে অশ্লীল কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। তারা বাংলাদেশে বসেই ভিডিও ধারণ, সম্পাদনা ও আপলোড করতেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান। তিনি জানান, ওই দম্পতি বিদেশি একটি ওয়েবসাইটে নিয়মিত পর্ন কনটেন্ট আপলোড করতেন। তাদের পরিচালিত চ্যানেলটি বিশ্বের জনপ্রিয় পর্ন সাইটগুলোর মধ্যে একটি শীর্ষস্থানে উঠে আসে।
তদন্তে দেখা গেছে, তারা বাংলাদেশে বসেই ভিডিও ধারণ, সম্পাদনা ও আপলোড করতেন এবং এর মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করছিলেন।
এর আগে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বসেই আন্তর্জাতিক প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকার অভিযোগ ওঠে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ‘মডেল’ বলে পরিচয় দিতেন। তারা বিশ্বের অন্যতম বড় ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিডিও প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন।
বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এ যুগল শুধু নিজেরাই অপরাধ করছেন না, বরং অন্যদেরও এই পথে যুক্ত হতে উৎসাহিত করছেন। এর ফলে বাংলাদেশে বসে পর্ন ভিডিও বানানো ও প্রচারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠছে।
সম্প্রতি দ্য ডিসেন্ট নামের একটি পত্রিকা এই দুই যুগলের বিষয়টি সামনে এনেছে। ১৭ অক্টোবর দ্য ডিসেন্ট একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল ‘পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশি যুগল যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্ন তারকা’।
প্রতিবেদনটিতে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল, কীভাবে এক বাংলাদেশি দম্পতি অ্যাডাল্ট ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেন এবং তাদের কর্মকাণ্ড কীভাবে তরুণ প্রজন্মকে এই খাতে আকৃষ্ট করছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর দেশজুড়ে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
গবেষণামূলক অনুসন্ধানভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম দ্য ডিসেন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ যুগল ২০২৪ সালের মে মাস থেকে অনলাইনে সক্রিয় হন। এক বছরের মধ্যে তারা শতাধিক ভিডিও প্রকাশ করে বিপুল দর্শক ও অনুসারী অর্জন করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুগলটি শুধু একটি ওয়েবসাইটেই নয়, কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কনটেন্ট প্রকাশ করছেন। সেইসঙ্গে টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামেও নিজেদের কার্যক্রম প্রচার করছেন। ২০২৪ সালের মে মাসে তাদের নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা হয়, যেখানে কয়েক হাজার সদস্য রয়েছেন। সেখানে নতুন ভিডিওর লিংক ও তাদের আয়ের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়।