বৃহস্পতিবার, 16 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

সাভারে দুবাই গেস্ট হাউসে অভিযান, ২১ জনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা


স্টাফ রিপোর্টার : সাভার বাসস্ট্যান্ডের ক্যাপ্টেন সামাদ টাওয়ারের দুবাই গেস্ট হাউসে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৯ জন নারী এবং ১৩ জন পুরুষসহ ২২ জনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২ টারদিকে তাদের আটক করা হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) তাদের মধ্য থেকে ১ জনকে ছেড়ে দিয়ে বাকী ২১ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতার করতে পারেনি।


এ ঘটনায় সাভার মডেল থানার এসআই মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ বুধবার (১৫ অক্টোবর) বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা (নং-৫৪) দায়ের করেছেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে ২৭ জনকে। মামলায় ২১ জনের নামউল্লেখসহ ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।


মামলার আসামীরা হলো-১। মোঃ আল সাভার, জেলা-ঢাকা, ২। নাইমুল ইসলাম (৩১), পাবনা সদর, ৩। আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে তুহিন (২১), জামসিং নবীন মার্কেট, সান্ডার, ৪। মোঃ সাকিল (১৪), থানা-আশাশনি, জেলা-সাতক্ষীরা, (বর্তমান-আানন্দপুর সিটিলেন, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা, ৫। আশরাফুল আলম (২৬), থানা-কুড়িগ্রাম সদর, জেলা-কুড়িগ্রাম, ৭। মাশকারুজ্জামান রবিন (২৪), থানা ফুলবাড়িয়া, জেলা-ময়মনসিংহ, ৮। মোঃ ইসলাম শেখ (৪০), থানা-চারঘাট, রাজশাহী, ৯। আকাশ মিয়া (২৫), থানা আটিপাড়া, জেলা-নেত্রকোনা, ১০। মো: সাজু মিয়া (২৫), থানা- রাজারহাট, জেলা-কুড়িগ্রাম, ১১। আসাদুজ্জামান (৪০), বেতাগি, জেলা-বরগুনা, ১২। মেহেদী হাসান (৩২), থানা-বোয়ালমারী, জেলা-ফরিদপুর, ১৩। সিয়াম (২৩), থানা-গৌরনদী, জেলা, ১৪। মেহেদী হাসান বাবু (২৪), থানা-বোয়ালমারী, জেলা-ফরিদপুর, ১৫। পারভীন আক্তার মনি (২৫), থানা-মানিকগঞ্জ সদর, ১৬। তাসলিমা বেগম (৩০) থানা ও জেলা-মানিকগঞ্জ সদর, ১৭। মৌসুমী আক্তার (২৩), থানা-পার্বতীপুর, জেলা-দিনাজপুর, ১৮। লিজা আক্তার (২৫), টঙ্গী, গাজীপুর, ১৯। মিথিলা আক্তার (২৩), থানা-ধনুট, জেলা-বগুড়া, ২০। আসমানি হক উর্মি (২৩), থানা-মাদারগঞ্জ, জেলা-জামালপুর ও ২১। আদুরি খাতুন (২৫), থানা-ফকিরহাট, জেলা-বাগেরহাটসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ১১/১২(২)/ ১৩ ধারায় মামলা করা হয়েছে। 


জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ক্যাপ্টেন সামাদ টাওয়ারের ৫ তলায় তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দুবাই গেস্ট হাউস নাম দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে। জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা দুবাই গেস্ট হাউসে ভাঙচুর চালায় দেহ ব্যবসার অভিযোগে। তখন ১৯ জন পতিতা ও খদ্দর ধরা পড়ে এবং রেস্ট হাউসটি সীলগালা করে পুলিশ। ঘটনার পর কয়েকদিন দুবাই গেস্ট হাউসটি বন্ধ থাকলেও আবারো অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যায়। দুবাই গেস্ট হাউসের মালিক কথনো মাহমুদ নামে কখনো সবুজ নামে পরিচয় দেয়।


টাওয়ারের আংশিক মালিক জাহিদুল আলম জানান, গেস্ট হাউসের মালিক মো: সবুজ বসবাসের জন্য তার কাছ থেকে তিনটি আবাসিক ফ্লাট-এর চুক্তি করে। কিন্তু চুক্তি বরখেলাপের বিরুদ্ধে তাদের বহুবার সতর্ক করা হয়। কিন্তু তারা গোপনে সেখানেই এ সব অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ ও স্থানীয় কিছু নেতাদের ম্যানেজ করে তারা এই ব্যাবসা পরিচালনা করছে। 


সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিঞা জানান, অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ৯ নারীসহ ২২ জনকে থানায় আনা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীও থাকতে পারেন বলে জানান তিনি।


ওসি আরও বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এদিকে গেস্ট হাউসে কর্মরত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুলিশকে সোর্স এর মাধমে প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এ গেস্ট হাউজে অবৈধ এবং কর্মকান্ড চালানো হতো। গত তিন মাসের টাকা বকেয়া থাকায় রাতে এই অভযান চালায় পুলিশ। তবে পুলিশ টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক না বলে জানান। এলাকাবাসী অনতিবিলম্ব এই গেস্ট হাউসটি বন্ধ করে সীলগালা করার জন্য দাবী জানিয়েছেন।


প্রসঙ্গত, ফুলকি গত ১০ সেপ্টেম্বর ‘ সাভারে গেস্ট হাউস ও আবাসিক হোটেলের আড়ালে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা, প্রশাসন নীরব’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশত হয়েছিলো।

 

 

 

সর্বাধিক পঠিত