বৃহস্পতিবার, 16 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

আশুলিয়ায় তিন মাসে মাদকের ৮৮ মামলা, গ্রেপ্তার ১১৮


স্টাফ রিপোর্টার : সারাদেশের ন্যায় শিল্পাঞ্চল আশুলিয়াতেও বিপদজনক হারে বেড়েছে মাদকের আগ্রাসন। আশুয়িলার প্রায় প্রতিটি অলিগলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদকদ্রব্য। যদিও প্রায় প্রতিদিনই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে মাদক কারবারিদের।
ঢাকার উপকন্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়াতে অভিযান চালিয়ে গত তিনমাসে অন্তত ১১৮জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। যাদের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
আশুলিয়া থানায় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আশুলিয়া থানায় অন্তত ৮৮টি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার আসামির সংখ্যা ১১৮ জন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অনেকের নামে একাাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
এই ৮৮টি মাদক মামলার তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, গত তিন মাসে বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ১১৮ জন মাদক কারবারির হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১ হাজার ১৬৬ লিটার ৫০০ মিলি দেশীয় চোলাই মদ, ৭ হাজার ৮০০ লিটার জাওয়া, ৬ বোতল বিদেশী মদ, ৭ বোতল ফেনসিডিল, ৩৮২ গ্রাম হেরোইন, ৪ হাজার ২২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৪৮ কেজি ৫৭০ গ্রাম গাঁজা।
বিভিন্ন বাহিনীর এমন অভিযানের পরেও ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের বিস্তার। তাই তো মাদকের এমন রমরমা কারবার দেখে তরুণসমাজ নিয়ে চিন্তায় সচেতন মহল।
সমাজে মাদকের এমন ভয়াল থাবার বিষয়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর মুহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন বলেন, মাদক সামাজিক একটা ব্যাধীতে রুপ নিয়েছে। এর ভয়াবহতা চরম আকার ধারন করেছে। এতে আমরা আসলে বিচলিত। মাদক থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে পরিবার, স্কুল, মসজিদ ও সামাজিক পর্যায়ে মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করা। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুবসমাজকে যুক্ত করা এবং ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা। সেই সাথে সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে- এসব খেয়াল রাখা, তাদের সাথে ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা। পাশাপাশি মাদক সেবন বা বিক্রিয়ের খবর পেলে সাহসের সাথে প্রতিবাদ করা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে থানা পুলিশ কেমন ভূমকিা পালন করছে জানতে চাইলে? আশুলিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। মাদকের ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই। আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি মাদক নিয়ন্ত্রণ করে আশুলিয়াকে অপরাধ মুক্ত করতে।
মাদকের ব্যাপারে স্থানীয়রা যদি নির্ভরযোগ্য তথ্য দেন অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে, শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণে থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও যৌথ বাহিনীর অভিযান চোখে পড়লেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান তেমন দেখা যায় না। তবে কর্মকর্তারা বলছেন ভিন্ন কথা, তাদের দাবি- আশুলিয়াতে প্রতিনিয়ত তাদের অভিযান চলছে।
আশুলিয়াতে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার উপ-পরিচালক ঊর্মি দে বলেন, গত পরশু দিনও আমাদের ৮২ জনের একটি টিম আশুলিয়ার ৫টি স্থানে অভিযান চালিয়েছে। একটি স্থানে আলামত না পাওয়া গেলেও বাকি ৪টি স্থান থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
 

সর্বাধিক পঠিত