মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ জেলায় একদিনে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় নেমেছে শোক ও উদ্বেগের ছায়া। সোমবার (১৩ অক্টোবর) দিনের বিভিন্ন সময়ে জেলার সদর, সিঙ্গাইর, ঘিওর ও সাটুরিয়া উপজেলায় পৃথক স্থান থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করেছেন পুলিশ।
সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, দুপুরে সরকারি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকায় পৌর ভূমি অফিসের পেছনে একটি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলা থেকে আবু হানিফ (৩৫) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত আবু হানিফ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আবুল বসরের ছেলে।
পরিবারের সদস্যদের বরাতে পুলিশ জানায়, বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দিতে না পারায় মানসিক চাপে পড়ে আবু হানিফ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এদিকে, সদর উপজেলার দিঘি ইউনিয়নের মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, মৃত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
অন্যদিকে, সিঙ্গাইর উপজেলার দেওলি গ্রামে রোজিনা আক্তার (২৮) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে রোজিনা বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একইদিন ঘিওর উপজেলার দেওভোগ গ্রামে সোনা মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটিও আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া এলাকায় এক দুঃখজনক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান রাসেল মাহমুদ (৩০) নামে এক শ্রমিক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারখানায় কাজ করার সময় ছাদ থেকে ড্রাম পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে রাতেই হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাসেল জামালপুর সদর উপজেলার রহুল্লী গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এবিএম তৌহিদুজ্জামান জানান, উদ্ধার করা সব মরদেহ মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
একদিনে আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও অজ্ঞাত কারণে পাঁচজনের মৃত্যুতে মানিকগঞ্জবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ বলছে, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে।