জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদের আবাসিক হলে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৪ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। একই বিভাগের ৫৩ ব্যাচের (দ্বিতীয় বর্ষ) সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। রবিবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর ছাত্র হলের ৪০৩ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, গতকাল রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গার্ড, হল সংসদের দ্বিতীয় বর্ষের ১৫ জন শিক্ষার্থী মিলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দিচ্ছিলেন।
অভিযুক্তরা হলেন সাইদ, তানভীর রহমান মুন, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, আবু তালহা রনি, রাজিব শেখ, ইয়ামিন খান হৃদয়, আবু সাইদ, জান্নাতুল আদন, আহমেদ আরেফিন রাতুল, রেজওয়ান ইসলাম রিফাত, তাসনিমুল হাসান জুবায়ের, রুম্মান, রাকিবুল হাসান নিবিড়, জাহিদুল ইসলাম এবং উশান্তা ত্রিপুরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২১ নং হলের ৪০৩ নং কক্ষে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং করা হচ্ছে এমন তথ্য আসে হল সংসদের কয়েকজন প্রতিনিধির কাছে। তারা বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিকদের অবগত করেন। পরে হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে হল সংসদের প্রতিনিধিরা হলের দুজন গার্ড ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই কক্ষে যান।
এ সময় নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং প্রদানকালে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতেনাতে ধরেন।
হল সংসদ প্রতিনিধি ও গার্ডরা জানায়, র্যাগিংয়ের খবর পেয়ে তারা ওই কক্ষে যান। পরে সেখানে গিয়ে কক্ষটি সম্পূর্ণ অন্ধকার এবং দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় পান। এক পর্যায়ে লাইট জ্বালালে সেখানে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের নবীন প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
র্যাগ চলাকালে তাদের সবার মোবাইল ফোন কেড়ে একপাশে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া একসঙ্গে এত শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ভয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। কক্ষে উপস্থিত দ্বিতীয় বর্ষের (৫৩ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, একটি অনুষ্ঠানের আলোচনার জন্য জুনিয়রদের ডাকা হয়েছে। গরমের কারণে আলো নেভানো ছিল এবং পাশের কক্ষে পরীক্ষার্থী থাকায় শব্দ এড়াতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
অভিযুক্ত ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর জামান মুন বলেন, ‘পরীক্ষার কারণে আমরা নবীন বরণ অনুষ্ঠান করতে পারিনি।
তাই আলোচনার জন্য তাদের ডেকেছিলাম।’
এই ঘটনায় ২১ নং হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ আল-মাহদী বলেন, ‘আমরা এসে দেখি দরজা-জানালা বন্ধ করে জুনিয়রদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল এবং তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। র্যাগিংয়ের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
এ-বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশেদুল আলম বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। ২১ নং ছাত্রহল প্রশাসন এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছে। হল প্রশাসনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’