পঞ্চগড় সংবাদদাতা : বক্তব্য দেওয়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গতকাল শনিবার পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে আয়োজিত লংমার্চের সমাপ্তি বক্তব্যে সারজিস এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে যখন সারজিস আলম বক্তব্য রাখছিলেন, তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি অভিযোগ করেন, পঞ্চগড়ে এনসিপির অনুষ্ঠান চলাকালে এর আগেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে এবং এটি তিন দিনের কর্মসূচিতে তৃতীয়বারের মতো ঘটল।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেসকোর কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ার করেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘এর আগেও পঞ্চগড়ে এনসিপির প্রোগ্রাম চলাকালে বিদ্যুৎ গেছে। নেসকোর যে মালিক তাকে এবং তার বাপকে জবাব দিতে হবে, প্রোগ্রাম চলাকালে, এটা হয় কেন? এক দিন হইতো, দুই দিন হইতো কিচ্ছু বলতাম না, তিন দিনের তিন দিনই এটা হইছে।’
এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করে সারজিস আলম বলেন, ‘যারা এটা করছে, তারা হচ্ছে রাজনৈতিক... (লেখার অযোগ্য)। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নিব। তাদের কলিজা কত বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।’
সারজিস আলম নিজের নাম উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এর পর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান পঞ্চগড়ে যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, ওই প্রতিষ্ঠান এই পঞ্চগড়ে থাকবে না, এটা আমার নিজের কমিটমেন্ট।’
দায়ী কর্মকর্তাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও কঠোর ভাষায় করেন, ‘খুনি হাসিনার মতো স্বৈরাচারকে গোনায় ধরি নাই, তোর মতো জেলার-বিভাগের নেসকোর দায়িত্বশীলদের গোনায় ধরার টাইম নাই।’
উল্লেখ্য, চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে সারজিস আলমের নেতৃত্বে গতকাল শনিবার পঞ্চগড় শহর থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। লংমার্চের সমাপ্তি আয়োজনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি দুর্নীতিবাজ, দখলদার, সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যত দিন বেঁচে আছি, তাদের আর শান্তির ঘুম হবে না। শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাদের আমরা আপাদমস্তক দেখে নিব, তাদের কলিজা কত বড় হয়ে গেছে।’
লংমার্চটি গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পঞ্চগড়ের ঐতিহাসিক চিনিকল মাঠ থেকে শুরু হয় এবং এতে বেশ কয়েকটি পিকআপ ও পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর অংশ নেয়। এনসিপির পাঁচ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারীসহ নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।
