স্টাফ রিপোর্টার : অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণাণয়। এরই মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণাণয়। এরই মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনো ডিসি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেনি মন্ত্রণালয়। নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় আগে সারা দেশে একযোগে ডিসি পদায়নের পরিকল্পনা করছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মনে করে, বিতর্কমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় ডিসিদের। তারা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বের পাশাপাশি পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া সমন্বয় করেন। তাই এ মুহূর্তে যে কাউকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিতে চায় না সরকার। যেসব কর্মকর্তা বিগত তিনটি নির্বাচনের কোনোটিতে বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন তাদের ফিটলিস্টেই রাখছে না সরকার। জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকার। ফলে গত ১১ জানুয়ারি নতুন তালিকা তৈরির কাজ শুরু হলেও এখনো সাক্ষাৎকার গ্রহণ চলছে।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডিসি পদের ফিটলিস্ট অনুযায়ী সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। তবে তাদের অনেকেই সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি। বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচের ফিটলিস্ট অনুযায়ী সাক্ষাৎকার কার্যক্রম চলছে। এ ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ১৮৪ জন। দুই ধাপে ফিটলিস্ট অনুযায়ী সাক্ষাৎকারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ৮০ জন। তবে এ ব্যাচ থেকেও কয়েকজন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সাক্ষাৎকারে অংশ নেননি। সব প্রক্রিয়া শেষ হলে একযোগে সারা দেশে ডিসি নিয়োগ দেয়া হবে। এ কারণে যুগ্ম সচিব হিসেবে যারা পদোন্নতি পেয়েও বর্তমানে ডিসির পদে রয়েছেন তাদের আরো কিছুদিন এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের (এপিডি) এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা ডিসি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারিনি। এটা চলছে। এবার একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। আর এই মুহূর্তে ডিসি নিয়োগ দেয়া হলে নির্বাচনের আগে আবারো এ পদে পরিবর্তন করা লাগতে পারে। তাই এখন যারা আছেন তাদের দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে। আমাদের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর উপদেষ্টামণ্ডলীর যে কমিটি রয়েছে সেখানে তালিকা পাঠানো হবে। এরপর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং এটি করা হবে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় আগে।’
এ প্রসঙ্গে এপিডির অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হক বলেন, বিধি অনুযায়ী ডিসি নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। সব কাজ শেষে সবাই জানতে পারবেন।
বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ যুগ্ম সচিব ও এর ওপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে গঠন করা হয়েছে ‘জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’। এ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আরো রয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব। জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় আগে সারা দেশে একযোগে ডিসি নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’র সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো মিটিং হয়নি। যখন প্রস্তাব পাঠাবে তার পরেই দেখা যাবে। যেহেতু মিটিং হয়নি তাই এখন কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না।