ফুলকি ডেস্ক : বিশ্বনেতারা বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন, যা গাজার দুই বছরের যুদ্ধের অবসানের পথে সহায়তা করতে পারে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আশা প্রকাশ করেছেন, এই চুক্তি ‘একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের পূর্বভূমিকা হয়ে উঠবে’, যা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যাবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সব বন্দিকে ‘সম্মানজনকভাবে মুক্তি’ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধ একবারে শেষ হতে হবে।
তিনি গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর-জেনারেল টেড্রস আধানম গেব্রেয়াসুস একে ‘টেকসই শান্তির পথে বড় পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি জানান, ডব্লিউএইচও গাজার ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকটে সহায়তা বাড়াতে এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পুনর্গঠনে কাজ করতে প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ হলো শান্তি।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি সরকারকে যুদ্ধবিরতির দিকে উৎসাহিত করতে তিনি ‘প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করেছেন।’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেয়েন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান আন্তোনিও কস্তা যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার ও তুরস্কের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে একে স্থায়ী শান্তির সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস একে ‘গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য’ বলে আখ্যা দেন।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী ও ট্রাম্পের মিত্র জর্জিয়া মেলোনি একে ‘অসাধারণ খবর’ বলেছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ আশা প্রকাশ করেছেন, এটি একটি ‘রাজনৈতিক সমাধানের’ পথ তৈরি করবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎস একে ‘উৎসাহব্যঞ্জক’ বলে উল্লেখ করে বলেন, তিনি ‘এই সপ্তাহেই সমাধানে’ আশাবাদী।
গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের অন্যতম কণ্ঠশালী সমালোচক স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, এখন বেসামরিক জনগণকে সহায়তা দেওয়া উচিত এবং ‘যে নৃশংসতা ঘটেছে, তা আর কখনো পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়।’
ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের তীব্র সমালোচক আয়ারল্যান্ড বলেছে, এই চুক্তি ‘যদি সবাই আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে, তবে এটি অবর্ণনীয় মানবিক দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে পারে।’
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেন, ‘এটি ভয়াবহ বোমাবর্ষণ থামাতে, বন্দুকের শব্দ স্তব্ধ করতে, দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা শেষ করতে এবং গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করতে পারে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর ‘নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টা’র প্রশংসা করে চুক্তিটিকে ‘একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘এখনই এই চুক্তি সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করতে হবে, কোনো বিলম্ব ছাড়াই এবং গাজায় জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তার সব বাধা তুলে নিতে হবে।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেন, বেইজিং যত দ্রুত সম্ভব গাজায় ‘স্থায়ী ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতি দেখতে চায়।
তিনি যোগ করেন, ‘চীন সেই নীতিতে অটল যে ‘ফিলিস্তিন শাসন করবে ফিলিস্তিনিরাই।’
