মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের আঠালিয়া গ্রামে হানিফ (৫৫) হত্যার নেপথ্যে চাঞ্চল্যেকর কাহিনী বেরিয়ে এসেছে। আপন বড় ভাই বাচ্চু বেপারীর সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ধরে তারই পক্ষ নিয়ে গত শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন করে পাশের বাড়ির চাচাতো ভাইয়ের দুই ছেলে স্বাধীন ওরফে সেন্টু (২৫) ও জাহাঙ্গীর (২০)। তারা দুই ভাই হানিফকে ধারালো দা ও টেঁটা দিয়ে খুন করে।
এ ঘটনায় রবিবার (১০ অক্টোবর) নিহত হানিফের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা এজাহারভুক্ত চার আসামী বাচ্চু বেপারী, তার মেয়ে পাখি আক্তার, স্ত্রী হাসেদা আক্তার ও হোসনেরা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেএমও তৌফিক আজম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মামলার বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হত্যার শিকার হানিফ আঠালিয়া গ্রামের মৃত ইলা বেপারীর ছেলে। তিনি পেশায় গাড়ি চালক ছিলেন ও চার সন্তানের জনক। বড় ভাই বাচ্চু বেপারী সাথে তার বাড়ি সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
ঘটনার দিন বাচ্চু বেপারী তার চাচাতো মৃত মিনা বেপারীর ছেলে-স্বাধীন ও জাহাঙ্গীরসহ পেশী শক্তির ব্যবহার করে হানিফের অনুপস্থিতিতে বাড়ির জায়গা পরিমাপ করে সীমানা নিধারণ করে। তাদের মাপ অনুযায়ী হানিফের বসত বাড়ির অংশে চিহ্ন দেয়া হয়। এর মধ্যে বিকেল তিনটারদিকে হানিফ বাড়িতে এসে এলাকার লোকজনের এক তরফা জমির মাপের বিষয়টি জানান।
এ খবর জানতে পেরে ঘটনার মূলহোতাদ্বয়-স্বাধীন ওরফে সেন্টু ও জাহাঙ্গীর তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে হানিফকে প্রকাশ্যে রামদা কুপিয়ে ও টেঁটা বিদ্ধিয়ে হত্যা করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই গ্রামের আক্কাছ আলী জানান, সেন্টু ও জাহাঙ্গীর তাদের ঘরে রাখা দেশীয় অস্ত্র রামদা কুপিয়ে ও টেঁটা বিদ্ধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, ওইদিন সকাল থেকে বাচ্চুর বাড়িতে অনেকে লোকজনের সমাসম ছিল। রান্না-বান্নারও ছিল বড় আয়োজন। হানিফকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবী। নিহতের পরিবার এ হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার হিসেবে জড়িত ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এলাকায় বইছে শোকের মাতম। ইতিমধ্যে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।