বৃহস্পতিবার, 9 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

পাচার করা হবে এমন তরুণীদের পাসপোর্ট করা হয় মাত্র ৪ ঘণ্টায়

 

স্টাফ রিপোর্টার : চীনের বন্দিদশা থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন এক তরুণী। নারী পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে চীনে যাওয়ার পর মোবাইল ফোনে দেশের প্রথম সারির একটি গণমাধ্যমকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন নীলা (ছদ্মনাম)। এছাড়া সম্প্রতি কৌশলে দেশে ফিরে এসেছেন হেলেনা (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, পাচার হওয়া তরুণীদের পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়।

দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে এমন-ই এক ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে আসে।

ভুক্তভোগী হেলেনা গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে চাকরির মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাঠিয়েছিল প্রতারক চক্র। বাংলাদেশ থেকে আরও তরুণী সেখানে পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে আমাকে দেশে ফিরলেও, আমার বান্ধবী (নীলা) এখনো আটকা পড়েছে। পাচারকারীরা এখন আমাকেই চক্রের সদস্য হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। আমার মাধ্যমে আরও তিন-চারজন মেয়ে চীনে পাঠানোর চেষ্টা করছে তারা। আমি চাই না, অন্য কোনো মেয়ে এইভাবে প্রতারিত হোক।”

প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, পাচারকারী চক্রের নেতৃত্বে আছেন আব্বাস মোল্লা। তার প্রধান সহযোগী সিলভী নামের এক নারী। অন্য সদস্যদের মধ্যে আছেন জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, আকাশসহ আরও কয়েকজন। চক্রটি সাধারণত অসহায় দরিদ্র পরিবারের সুন্দরী তরুণীদের টার্গেট করে।

ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, চক্রের সদস্যরা পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশনের সব কাজ সম্পন্ন করেন। সাধারণত পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক, তবে পাচারকারী চক্রের তরুণীরা ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট পেয়ে যান। তাদের সাহায্যে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করা হয়। সাধারণ মানুষ বিদেশ যাওয়ার আগে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়, কিন্তু পাচারকারী চক্রের সদস্যরা কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হন না।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পুলিশ ও ভুক্তভোগী তরুণীদের সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, পাচারকারীরা পাসপোর্ট অধিদপ্তর, ভিসা সেন্টার এবং ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তাদের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালাচ্ছে।

প্রতিবেদনে সবশেষে বলা হয়, এ বিষয়ে শাহ আলী থানায় বুধবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা শাহ সুলতান মাহমুদ জানান, “চক্রের সদস্যদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তাদের ধরতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটও এ বিষয়ে কাজ করছে। আশা করছি, শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”
 

সর্বাধিক পঠিত