বৃহস্পতিবার, 9 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার চার দিন পর তিন মামলা করল পুলিশ, আসামি ১১০০

 

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা : খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় চার দিন পর তিন মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে গুইমারা থানায় এ মামলা হয়। তিনটি মামলাতেই পুলিশ বাদী হয়েছে।

পুলিশ জানায়, তিনটি মামলার মধ্যে একটি করা হয়েছে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি কর্মচারীদের আহত করা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে। এতে অজ্ঞাত নামা ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি হয়েছে হত্যার অভিযোগে। এতেও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সদরে ১৪৪ ধারা ভেঙে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও সহিংসতার অভিযোগেও একটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক চৌধুরী মামলার এ তথ্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন আছে। গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা এখনো বহাল। তবে আজ খাগড়াছড়িতে যানবাহন এবং লোকজনের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জেলা থেকে দূরপাল্লার যান ছেড়ে গেছে। আজ খাগড়াছড়ি জেলার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় বাজারেও লোকজনের ভিড় দেখা গেছে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। এরপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মনে করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাহলে ১৪৪ ধারা তুলে দেওয়া হবে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। রাতেই তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে অবরোধ ডাকা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি। অবরোধের মধ্যেই রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে স্থানীয় একটি পক্ষও সংঘর্ষে যোগ দেয়। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন। রামেসু বাজার এলাকায় আগুন দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকানে।

এর মধ্যে খাগড়াছড়ির ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। তবে এ প্রতিবেদনের বিষয়ে ক্ষোভ জানান কিশোরীর বাবা। 
 

 

সর্বাধিক পঠিত