বৃহস্পতিবার, 9 অক্টোবর 2025
MENU
daily-fulki

রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের ভেতরেই সমাধানযোগ্য: ইউএনএইচসিআর প্রধান গ্রান্ডি

 

ফুলকি ডেস্ক : জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে- তাই স্থায়ী সমাধানও সেই দেশের ভেতরেই সম্ভব। তিনি সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সাহসী ও কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশা থামবে না।

সংযুক্ত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে গ্রান্ডি এসব কথা বলেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আট বছর আগে মিয়ানমারের সেনাদের সহিংসতার কারণে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং অনেকে রাখাইন রাজ্যেই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রেখেছে।


গ্রান্ডি বলেন, রাখাইনে বর্তমানে আরাকান আর্মির কিছু অঞ্চল দখলে থাকলেও রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার মানে কোনও তফাৎ আসেনি; তাদের উপর গ্রেপ্তার-আটক হওয়ার ভীতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সীমাবদ্ধতা, চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, জোরপূর্বক শ্রম ইত্যাদি চলছেই। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা প্রতিদিনই বর্ণবাদী আচরণ ও আতঙ্কের শিকার।

বাংলাদেশের নিকট তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০২৪ সালে নতুন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে। গ্রান্ডি বলেন, ‘অসংখ্য চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’


বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের তহবিলের প্রশংসা করেন তিনি; তবু বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা তহবিলে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যথেষ্ট তহবিল না পেলে জরুরি সহায়তা কাটছাঁট করতে হবে। এতে শিশুদের অপুষ্টি বাড়ার এবং রোহিঙ্গাদের বিপজ্জনক নৌযাত্রায় আহত বা প্রাণহানির ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে, সতর্ক করে গ্রান্ডি বলেন।

গ্রান্ডি বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের কাছে তহবিল, পুনর্বাসন, শিক্ষা ও শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেন, কেবল মানবিক সহায়তায় এই সংকট সমাধান হবে না। আমরা উদাসীনতার পথে চলতে পারি না; একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস হতে দিয়ে সমাধান আশা করা যায় না।’

রাখাইন উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশগুলোকে তিনি এখনও প্রাসঙ্গিক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, যদি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সাহসী ও স্থায়ী পদক্ষেপ নেয় তবেই রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে। সর্বশেষ তিনি প্রভাবশালী দেশগুলোকে মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে সক্রিয় সম্পর্ক বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়সঙ্গত সমাধান আনা সম্ভব হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত