আশুলিয়া প্রতিনিধি : আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকদের আন্দোলনের ফলে ৩ সপ্তাহ ধরে অচল অবস্থা চলছে। প্রতিদিন শতাধিক ভূমি রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পাদন হওয়ার কথা থাকলেও আন্দোলনের কারণে এখন দৈনিক ২০/২২টি দলিল সম্পাদন হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখকদের পক্ষে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কাছে পাহাড়া বসানো হয়েছে। সহসাই কেউ ভূমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য অফিসে যেতে না পারেন। যারা ভূমি রেজিস্ট্রেশন করছেন তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি মারধর ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এমন অবস্থায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ফলে বিপাকে পড়েছেন শত শত ভূমি ক্রেতা বিক্রেতা।
সাব রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল অভিযোগ করে জানান, সমিতির নামে কয়েক জন দলিল লেখক উদ্ধেশ্য মূলকভাবে সাব রেজিষ্টার অফিসের কার্যক্রমে অচল অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
অপরদিকে দলিল লেখক সমিতির আহবায়ক জানান সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং তার প্রত্যাহার দাবিতে গত ১৯ জুন থেকে তারা নানা কর্মসূচী পালন করে আসছেন।
সাব রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল অভিযোগ করে জানান, সমিতির আহবায়ক আলমগীর হোসেন ভুয়া ওয়েবসাইড খুলে দাগ খতিয়ান পরিবর্তন করে খাজনা পরিশোধ করেছেন এবং সেই কাগজপত্র নিয়ে ভ্রম সংশোধন দলিল সম্পাদক করতে এসেছিলেন।
এছাড়া কিছু দলিল লেখক শ্রেণী পরিবর্তন করে ফিস কম দিতে চাচ্ছেন। এ সকল অন্যায় কাজে অপারগতা জানালে জমি তারা সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ভূমি রেজিষ্ট্রেশন করতে আসা লোকজনকে বাধা দেয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে মারধর করে আহত করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ডাস বাংলা ব্যাংকের স্থানীয় শাখা কর্মকর্তা আমির হোসেন আশুলিয়া থানায় ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাব রেস্ট্রিটার অফিস ভবনের দোতলায় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভূমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আসা সেবা গ্রহীতাদের পে-অর্ডার করতে নিষেধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সাব রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভুইয়া পাভেল।
বাধা প্রদান ও মারধরের বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাংক কর্মকর্তা আমির হোসেনের নিকট মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান ঘটনারদিন ব্যাংকের মর্গেজ দলিল রেজিস্ট্রেশন কাজ সম্পাদন করে সাব রেজিস্ট্রার অফিস হতে বের হলে আমাকে ১০/১২ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি মারধর করে আহত করে। এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ সম্পর্কে সোনালী ব্যাংক আশুলিয়া শাখার ম্যানেজার (এসপিও) ফেরদৌসী মমতাজ জানান তাদের ব্যাংকটির এ শাখা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দোতলায় করা হয়েছে মূলত পে-ওয়ার্ডার ও ভূমি রেজিষ্ট্রেশন সেবা গ্রহীতাদের সহযোগিতার জন্য। চলমান এ অবস্থায় লেন দেন খুবই কম হচ্ছে। বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার।
আশুলিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিস দলিল লেখক সমিতির আহবায়ক আলমগীর হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো সত্য নয়। সাব রেজিস্ট্রারের অসৌজন্যমূলক আচরণ, ঘুষ দুর্নীতির প্রতিবাদে তারা কলম বিরতি, মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা রেজিষ্ট্রার মুন্সী মোখলেসুর রহমানের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও উত্তর পাওয়া যাযনি। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে তিনি এ পরিস্থিতির শুরুর দিকে দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলেন কিন্ত সমাধান করতে পারেননি।