ফুলকি ডেস্ক : গত সাত-আট বছরে শ্রীলংকার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সম্প্রতি শ্রীলংকাকে তাদেরই মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছে টাইগাররা। চলতি এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকার কাছে হেরে বসেছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দল। পরে শ্রীলংকার ‘সহযোগিতা’য় আফগানদের পেছনে ফেলে সুপার ফোরের টিকিট পায় বাংলাদেশ। সুপার ফোরে আজ বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলংকা। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে রাত সাড়ে ৮টায়।
বৃহস্পতিবার রাতে আবুধাবিতে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সুপার ফোরে উঠে যায় শ্রীলংকা। তাদের জয়ে বিদায় ঘটে আফগানিস্তানের, শেষ চারের টিকিট পায় টাইগাররা।
লংকানদের জয়ের প্রার্থনায় ছিল গোটা বাংলাদেশ। এ নিয়ে লংকান ক্রিকেট বোর্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্টও হয়েছে। শ্রীলংকার জার্সি পরে ঘুরে বেড়িয়েছেন টাইগার সমর্থকরা। দুই দলের সমর্থকরা আজ আবার দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাবেন। বন্ধুত্ব রূপ নেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, কখনো বৈরিতায়।
সুপার ফোরে ওঠা দলগুলো প্রত্যেকেই একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে ও পরদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। সুপার ফোরে বাংলাদেশের সব ম্যাচই হবে দুবাইতে। ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইতে ১৭তম এশিয়া কাপের ফাইনাল।
২০১২ ও ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে এবং ২০১৮ সালে আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে এবং পরের দুবার ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে যায় টাইগাররা। চতুর্থবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারবে কি লিটন দাসের দল? এ পথে আজ প্রথম চ্যালেঞ্জের নাম শ্রীলংকা।
সিংহলিজদের রয়েছে এশিয়া কাপে সমৃদ্ধ ইতিহাস। বাংলাদেশ কখনই শিরোপা জিততে না পারলেও লংকানরা ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন! এছাড়া সাতবারের রানার্সআপ সিংহলিজরা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১৩ বার ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকার এশিয়া কাপের বিশাল অভিজ্ঞতা ছাড়াও বর্তমান ফর্মও আশাজাগানিয়া। জিম্বাবুয়ের মাটিতে সিরিজ জিতে আসার পর এশিয়া কাপে টানা তিন জয় তুলে নেয় চারিত আসালঙ্কার দল। সিংহলিজরা দারুণ আত্মবিশ্বাসী।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৭০ রানের টার্গেট তাড়া করে জিতেছে শ্রীলংকা। কুশল মেন্ডিস (৭৪*) ও কামিন্দু মেন্ডিস (২৬*) অনবদ্য ব্যাটিংয়ে লংকানদের স্বস্তির জয় এনে দেন। এছাড়া আগের দুই ম্যাচে টানা ফিফটি করেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। জিম্বাবুয়েতে ৭৩ রানের ইনিংস খেলা কামিল মিশারা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩২ বলে ৪৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। কুশল পেরেরা ও আসালঙ্কাও আত্মবিশ্বাসী। ব্যাটিংয়ে তুলনায় বোলিং খানিকটা নড়বড়ে। পেস বোলার নুয়ান তুষারা অবশ্য আফগান ম্যাচে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে বিশেষ বার্তাই দিয়ে রেখেছেন। স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা বাংলাদেশ ম্যাচে ২৫ রানে ২ উইকেট নেয়ার পর হংকংয়ের বিপক্ষে ১ উইকেট নেন। আফগানদের বিপক্ষে উইকেট না পেলেও মিতব্যয় বোলিং করেন। বাবা হারানো দুনিত ভেলালাগের জায়গায় আজ আবার ফিরতে পারেন মহিশ থিকসানা।
এদিকে এশিয়া কাপের আগে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ হঠাৎই ভারসাম্য হারিয়েছে। ওপেনিংয়ে আফগান ম্যাচে জায়গা হারান পারভেজ হোসেন ইমন। তার জায়গায় খেলা সাইফ হাসান ২৮ বলে করেন ৩০ রান। অবশ্য তানজিদ হাসান তামিমের ৩১ বলে খেলা ৫২ রানের ইনিংস দলকে ১৫৪ রানের পুঁজি এনে দেয়। এরপর দলকে জেতান বোলাররা। বিশেষ করে স্পিনার নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন এবং অভিজ্ঞ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান অনবদ্য বোলিং করেন।
গ্রুপ ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে শূন্য রানে ২ উইকেট হারিয়ে লজ্জার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। লংকান পেস বোলিংয়ের সামনে আজ আরেকটি পরীক্ষার সামনে লিটন দাসের দল।
লংকান ম্যাচের অস্বস্তি কাটিয়ে আফগানদের হারিয়েছে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী ফিরে পেয়েছে। শ্রীলংকাও টানা জিতে চনমনে। আজ তাই দুবাইয়ে লড়াই হওয়ার দাবি রাখে। দুই দলই সুপার ফোরের প্রথম পয়েন্ট তুলে নিতে মরিয়া হয়ে খেলবে।