বুধবার, 17 সেপ্টেম্বর 2025
MENU
daily-fulki

সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় জাতিসংঘে তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। বক্তব্যে তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে বিগত এক বছরে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সংস্কার ও আগামী দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবেন।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।

এ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলটি আগামী ২২ সেপ্টেম্বর একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্কে পৌঁছাবে।


২৩ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত প্রতিনিধিদলের আলোচ্যসূচির মধ্যে যেগুলো ঠিক হয়েছে, এর মধ্যে কিছু যোগও হতে পারে আবার কিছু বাদও হয়ে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে : ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘের শরণার্থী‍বিষয়ক হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ইতালি, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, কসোভো, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক।

জাতিসংঘের অধিবেশনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বেটার টুগেদার : এইটি ইয়ারস অ্যান্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।


এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব দেবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পেছাতে চাইলেই যে হয়ে যাবে এমন কিন্ত নয়, এর সঙ্গে অনেক বিষয় যুক্ত থাকে।’

সফরে নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশে কোনো দলের আন্দোলন দমানোর মতো ক্ষমতা সে দেশের সরকারেরও নেই। আমরা ধরে নিচ্ছি সেখানে প্রটেস্ট (আন্দোলন) হবে।

তবে আমরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত নই।’
২২ সেপ্টেম্বর এবার উচ্চ পর্যায়ের সভার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান শুরু হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে বিতর্ক পর্ব। ওই দিন থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন। জাতিসংঘের তিনটি মূল স্তম্ভ—শান্তি ও নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সবই সমানভাবে এবারের অধিবেশনে গুরুত্ব পাবে।


পররাষ্ট উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এবার ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিম অ্যান্ড আদার মাইনরিটিজ ইন মায়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চ পর্যায়ের সভার আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানান উপদেষ্টা।

তৌহিদ হোসেন বলেন, জাতিসংঘের এবারের অগ্রাধিকার ইস্যুগুলোর প্রত্যকটিই বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুগুলোর ওপর যেসব ইভেন্ট আছে, বাংলাদেশ তার সব কটিতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বহুপক্ষীয় কূটনীতিকে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে মনে করে।

 

সর্বাধিক পঠিত