ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অবৈধ অভিযান ও হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীগণের জাতীয় সংগঠন- বিপিএ। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অবৈধ অভিযান ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে সংস্থার বক্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরা হয়। ওই অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ডিত ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রেসক্রিপশন লেখা ও ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
একইভাবে গত ১ জুলাই হবিগঞ্জে একজন সিনিয়র ফিজিওথেরাপিস্টকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন এর ২৯ ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
কিন্তু বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৭১ নং আইন) এর ধারা ৬ এর ড অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার প্রদেয় স্বাস্থ্যসেবা পরিদর্শন, অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের ওপর ন্যস্ত। আইনের ধারা ১৪ এর ১ অনুযায়ী বাংলাদেশে আলাদাভাবে কোনো ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার কিংবা হাসপাতালের অধীনের কোনো ফিজিওথেরাপি ইউনিটের অনুমোদন ও পরিদর্শনের দায়িত্ব বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা অধিভুক্ত কোনো সিভিল সার্জন দপ্তর এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নন।
এই প্রসঙ্গে বিপিএ- এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাধীনতার আগে থেকেই ফিজিওথেরাপিস্টরা ডাক্তার পদবী নিয়ে প্র্যাকটিস করছেন। স্বাধীনতার পরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গেজেটে ফিজিওথেরাপিস্টদেরকে ডাক্তার পদবীতে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইনে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সুপ্রিমকোর্টে বিপিএ রিট পিটিশন দায়ের করে। সুপ্রিমকোর্টের আদেশ অনুযায়ী স্নাতক ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপিস্টদের পদবি ও প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে বিএমডিসি আইন প্রযোজ্য হবে না।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন অভিযোগ করেন, ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এমন অভিযান সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আদালত অবমাননার সামিল। বিপিএ এ অভিযানের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে ফিজিওথেরাপিস্টদেরকে হয়রানি করার প্রেক্ষিতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
বিপিএ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নেছার উদ্দিন দ্রুত সরকারের পক্ষ থেকে এমন অভিযান বন্ধ করে সংশ্লিষ্টদের পেশা পরিচালনায় সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।