রাবি সংবাদদাতা : দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রোববার কেন্দ্রীয় সংসদ ও ১৭টি হল সংসদের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে দেখা যাচ্ছে, নারীদের হলের ৯০টি এবং ছেলেদের হলের ১৬৫টি পদ রয়েছে। ২৫৫টি পদের মধ্যে মোট ৩৮ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫টি সম্পাদকীয় পদ এবং বাকি তিনটি কার্যকরী সদস্য পদ।
৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জনই মেয়েদের হলের; বাকি তিনজন ছাত্র হলের। মেয়েদের হলে ২৭ জন সম্পাদকীয় পদে এবং আটজন সদস্য পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন।
ছেলেদের হলের একজন সম্পাদকীয় পদে এবং দুজন কার্যকরী সদস্য পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন।
এ ছাড়া ছেলেদের হলে কোনো পদ শূন্য না থাকলেও মেয়েদের হলে চারটি কার্যকরী সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। অর্থাৎ এসব পদে কেউ প্রার্থী হননি।
এ ছাড়া রাকসুতে মোট পদ ২৩টি; সেখানে মোট ২৩ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ২৪৮ জন। মেয়েদের হলে ৯০টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ১৩৯ জন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-রাকসু ও হল সংসদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৫ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে তোড়জোড়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের রাকসু ও হল সংসদে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৬০০ জন ছাত্র এবং ১১ হাজার ৩০৫ জন ছাত্রী।
যেসব হলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
মুন্নুজান হলে একজন
জুলাই ৩৬ হলে সাতজন
রোকেয়া হল নয়জন
রহমতুন্নেসা হল নয়জন
তাপসী রাবেয়া তিনজন
খালেদা জিয়া হল ছয়জন
এবং ছেলেদের বিজয় ২৪ হলে তিনজন।
এ ছাড়া জুলাই ৩৬ হল, রোকেয়া হল, রহমতুন্নেসা হল ও খালেদা জিয়া হলে একটি করে পদ শূন্য রয়েছে। অর্থাৎ এই চারটি পদে কোনো প্রার্থী নেই।
রাকসু নির্বাচনের এ পর্যন্ত নয়টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের।
বাকি তিনটি মধ্যে একটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক তিন সমন্বয়কের নেতৃত্বে; একটি সামজিক সাংগঠনের এবং একটি স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীদের।
তবে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির ছাড়া কোনো প্যানেলই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি।
প্যানেল ও সংগঠন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘোষিত নয়টি প্যানেল হল- ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল, ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’; ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক তিন সমন্বয়কের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’, সামাজিক সংগঠন ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফোরামের (ইউএসডিএফ) ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’।
ভিপি পদে ১৯ জন, জিএস পদে ১৪ জন ও এজিএস পদে ১৬ জন। আর সিনেট ছাত্র প্রতিনিধির পাঁচ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৬০ জন।
২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একাডেমিক ভবনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন আয়োজনের সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। ছবিসহ ভোটোর তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ সম্পন্ন হয়েছে। ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে।