ধামরাই প্রতিনিধি : ধামরাইয়ে হত্যা ও সাংবাদিক পেটানোসহ একাধিক মামলার আসামী গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে ধামরাই থানার এস আই এসএম কাউসার সুলতান। তবে তাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত সাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার না দেখিয়ে অন্য একটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তবে তাকে গ্রেফতার করায় এলাকায় স্বস্তির নিঃস্বাস ছেড়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বনেরচর গ্রামের মনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার আসামী, জালসা গ্রামের বৃদ্ধ ফজলুল হককে হত্যা চেষ্টার মামলা আসামী, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ধামরাই প্রতিনিধি সাংবাদিক শামীম খানকে হত্যার চেষ্টাসহ একাধিক মামলার আসামী সোলায়মান হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাভার ক্যান্টনম্যান্ট নবীনগরের ডিওএইচএস এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজ বাড়ি ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের জালসা গ্রামে আসছিলেন। খবর পেয়ে ধামরাই থানা পুলিশ সেখান থেকে তাকে আটক করে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ১৫টি বছর জোরপূর্বক কৃষকের ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পেতো না। মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক এলাকার নিরীহ কৃষকদের ফসলি জমি থেকে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নিত। মাটি কাটতে বাধা দিলেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কৃষকের ওপর হামলা করাতেন। অনেকের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন।
এলাকার ত্রাস হিসেবে সোলায়মান পরিচিতি ছিলেন। এলাকাবাসী আরো জানায়, সোলায়মানের মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুইপক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির কয়েকজন গুরুতর আহতও হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ইউনিয়নের বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাসেমকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে তিনি যুবলীগের পদধারী নেতা হলেও তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলনে নিহত কলেজ ছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদ হত্যা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেনি পুলিশ। অথচ এর আগে আটককৃতদের মধ্যে অনেকের পদপদবী না থাকলেও পুলিশ তাদের সাদ হত্যা মামলার সন্দিগ্ধ আসামি করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। বহু অপকর্মের হোতা সোলায়মানকে সাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার না দেখিয়ে অন্য মামলায় আদালতে প্রেরণ করায় এলাকাবাসী চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে দেনদরবার ও বেলায়েত হোসেন নামে পুলিশের এক ইন্সপেক্টরের মধ্যস্থতায় তাকে সাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। অন্য একটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে গতকাল শুক্রবার।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শামিম খানের ছেলে ইমরান খান বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করায় সোলায়মান আমার বাবার ওপর হামলা করে হত্যা চেষ্টা করে। এঘটনায় মামলাও করা হয়েছে।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, একটি রাজনৈতিক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।