ফুলকি ডেস্ক : শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাক রাখা চাই। কারণ শাকের গুরুত্ব অপরিসীম। শাক শুধু স্বাদই বাড়ায় না, বরং পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় শরীরের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের শাক অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজমশক্তি উন্নত হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
পুষ্টিবিদরা আরও বলেন, এ শাকগুলো প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। তবে শাক ভালোভাবে ধুয়ে এবং সঠিকভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, শাক বেশি সিদ্ধ করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে, তাই হালকা ভাপে বা সামান্য রান্না করে খাওয়া ভালো।
বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকায় শাকের বিশেষ স্থান রয়েছে। এখানে আমরা এমন পাঁচটি শাকের কথা বলব, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে স্বাস্থ্য ও স্বাদ দুই-ই সমৃদ্ধ হবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, প্রতিদিনের খাবারে যে পাঁচটি শাক রাখলে স্বাস্থ্য ও স্বাদের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটবে—
পালংশাক
পালংশাক সবচেয়ে জনপ্রিয় শাকের মধ্যে একটি। এটি আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং কে-এর চমৎকার উৎস। পালংশাক রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, পালংশাক হজমশক্তি উন্নত করে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। বাঙালিরা পালংশাক দিয়ে তরকারি, ভাজা বা স্যুপ তৈরি করে খান। এটি আলু বা পনিরের সঙ্গে মিশিয়ে রান্না করলে স্বাদ দ্বিগুণ হয়।
পুঁইশাক
পুঁইশাক বাঙালির ঘরে ঘরে প্রিয় খাবার। এটি ফাইবার, ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। পুঁইশাক হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি আলু, বেগুন বা ইলিশ মাছের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। পুঁইশাকের ডাঁটা দিয়ে তৈরি তরকারি বাঙালির রান্নাঘরে বিশেষ জনপ্রিয় খাবার। এই শাক প্রতিদিন খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কলমিশাক
কলমিশাক বাঙালির পাতে আরেকটি জনপ্রিয় শাক। এটি ভিটামিন এ, সি এবং খনিজপদার্থে সমৃদ্ধ। সাধারণত কলমিশাক হজমে সহায়ক এবং শরীরের প্রদাহ কমায়। এটি সাধারণত ভাজা বা ডালের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। কলমিশাকের কোমলপাতা এবং ডাঁটা দুটোই রান্নায় ব্যবহার করা যায়। এটি রক্ত পরিশোধন এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
মেথিশাক
মেথিশাক বাঙালির খাবারে তুলনামূলকভাবে কম ব্যবহৃত হলেও এর পুষ্টিগুণ অসাধারণ। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। মেথিশাকের হালকা তেতো স্বাদ অনেকের পছন্দ। এটি ভেজে বা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। পুষ্টিবিদরা বলেন, মেথিশাক গর্ভবতী নারীর জন্য বিশেষ উপকারী এবং এটি দুধ উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
নোটেশাক
নোটেশাক বা আমরান্থ শাক বাঙালির পাতে আরেকটি প্রিয় উপাদান। এই শাক ভিটামিন সি, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। নোটেশাক সাধারণত ভেজে বা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। সহজলভ্য করে তুলেছে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, নোটশাক রোজ খাদ্যতালিকায় রাখলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।