দুই বছর পর ছুটিতে দেশে ফেরেন সৌদি প্রবাসী জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮)। শুক্রবার (১১ জুলাই) ভোরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাসে করে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে চালকের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তার। একপর্যায়ে চালক পরিবারকে ফেলে রেখে জাহাঙ্গীরকে জোর করে তুলে নিয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে হত্যার চেষ্টা চালান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রবাসীকে উদ্ধার করে।ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে নান্দাইলে। এ ঘটনায় পুলিশ মাইক্রোবাসের চালক শফিকুল ইসলামকে (২৮) আটক করেছে।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই বছর আগে উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের তেলিয়াপাড়া গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর সৌদি আরবে যান।
ছুটিতে শুক্রবার ভোরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা মাইক্রোবাস নিয়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আশিক বলেন, ‘জাহাঙ্গীর পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে চড়ে বসেন। কিছুদূর যেতেই জাহাঙ্গীর হোটেলে খাবার খেতে চাইলে তাতে আপত্তি জানান চালক শফিকুল।
এ নিয়ে দুই পক্ষে কথাকাটাকাটি ও মারামারি হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয় চালক। কৌশলে পরিবারকে ফেলে রেখে জাহাঙ্গীরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান নান্দাইলে। সেখানকার একটি গ্যারেজে তাকে আটকে রেখে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালান। এ সময় প্রবাসীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন পুলিশকে খবর দেন।
পরে পুলিশ সেখান থেকে জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আর চালক শফিকুলকে আটক করে থানায় নেয়।
প্রবাসী জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, চালক জাহাঙ্গীর তার সঙ্গে অযথা ঝগড়া করেন। একপর্যায়ে তাকে কৌশলে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে আসেন। চলন্ত অবস্থায় তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে নান্দাইলে এনে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালান।
অপরদিকে থানায় থাকা চালক শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, তার মাইক্রোবাস যে শর্তে ভাড়া করা হয়েছিল, সেই শর্ত ভঙ্গ করেন প্রবাসীর লোকজন। এর প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করেন জাহাঙ্গীরের তিন ভাই। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এ কাজ করেছেন, তবে হত্যার উদ্দেশ্যে নয়।
এ ব্যাপারে নান্দাইল থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। একজন প্রবাসীকে এভাবে মব সৃষ্টি করে মারতে পারেন না। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে।’