টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন কমিটির অভাবে এখন কার্যত নিস্ক্রিয় হয়ে আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ভবনটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকলেও অব্যবস্থাপনা, যথাযথ ব্যবহার ও তদারকির অভাবে দিন দিন হারাচ্ছে জৌলুস। দেয়াল থেকে খসে পড়ছে রং, কোথাও কোথাও জায়গা করে নিয়েছে আগাছা। ২০১৬ সালে ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হলেও এখনো শুরু হয়নি কোনো কার্যক্রম।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লাকি এন্টারপ্রাইজ ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২ কোটি ৫০ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৫ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শেষে ২০১৬ সালের ২৫ মে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মজিদ মিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়।
হস্তান্তরের প্রায় এক দশক পরও ব্যবহার না করায় ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে ভবনের সৌন্দর্য। ভেতরে থাকা সোলার সিস্টেম ও অন্যান্য সরঞ্জাম পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রধান ফটকের সামনে গড়ে উঠেছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এসএস পাইপ দিয়ে নির্মিত বেষ্টনীও নিয়মিত সিএনজির ধাক্কায় ভেঙে গেছে।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা পুরাতন ভবনেই তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের পর কেন ব্যবহার করা হচ্ছে না জানতে চাইলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল মজিদ মিয়া বলেন, ‘হস্তান্তরের পর ভবনটি ব্যবহারের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তা সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত কমিটি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়েও চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সেটিও তখন সম্ভব হয়নি। ভেতরে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। এ ভবনটি ঘিরে রয়েছে আইনি জটিলতা। সড়ক ও জনপথের জায়গায় অনুমতি না নিয়ে ভবন নির্মাণ করায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারসহ একাধিক ব্যক্তির নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রাজিব হোসেন বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এ ব্যাপারে আমি অবগত নই। খুব শিগগিরই নতুন ইউএনও আসবেন এবং পদক্ষেপ নেবেন।’