কুমিল্লা সংবাদদাতা : কুমিল্লা নগরের একটি ভাড়া বাসা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ও তাঁর মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাতটার দিকে নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুরী এলাকার একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়া বাসা থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে নিহতদের ছেলে বিষয়টি টের পান। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, কুমিল্লা নগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগর এলাকার প্রয়াত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৫২) ও তাঁর মেয়ে সুমাইয়া আফরিন (২৩)। নিহত সুমাইয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রায় চার বছর ধরে তাঁরা কালিয়াজুরী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। তাহমিনা বেগম দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী।
নিহতের বড় ছেলে আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (ফয়সাল) গণমাধ্যমকে বলেন, “রোববার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বাসায় এসে দেখি দরজা খোলা, একটি টুল দিয়ে দরজা ঠেকানো। ভেতরে প্রবেশ করে দেখি লাইট বন্ধ। লাইট জ্বালাতেই দেখি বোনের কক্ষে তাঁর নিথর দেহ, আর মায়ের কক্ষে মায়ের নিথর দেহ পড়ে আছে। আমরা জানি না কে বা কারা আমার মা ও বোনকে হত্যা করেছে। আমি সঠিক তদন্ত ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমাদের তেমন কোনো শত্রু ছিল না। কারা এভাবে আমাদের নিঃস্ব করল জানি না।”
পুলিশ জানায়, নিহত সুমাইয়ার বড় ভাই রাতেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন দিলে তারা ঘটনাস্থলে যায়। সোমবার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে কীভাবে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে তাঁদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের বাসা থেকে তেমন কিছু খোয়া যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “নিহতদের শরীরে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন নেই। মেয়েটির গলায় একটি দাগ পাওয়া গেছে, আর মায়ের একটি চোখ রক্তাক্ত ছিল। ভবনটির নিচতলায় একটি স্কুল রয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি, তা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।”