মঙ্গলবার, 16 ডিসেম্বর 2025
MENU
#
dailyfulki
daily-fulki

বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে চিকুনগুনিয়া, বড় প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা

ফুলকি ডেস্ক : মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও বড় আকারের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুত ক্রমবর্ধমান জনস্বাস্থ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ বছর ৩৩ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই কমপক্ষে ১০ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে অনুপস্থিত চিকুনগুনিয়া আবারও তীব্র আকার ধারণ করছে। জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ঢাকা-ভিত্তিক চারটি ল্যাবে ভাইরাসের ৭৮৫টি কেস নিশ্চিত করা হয়েছে। কিছু কিছু ল্যাবে সনাক্তকরণের হার ৩০% ছাড়িয়েছে। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে কর্মকর্তারা মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০টি কেস শনাক্ত করেছেন।


হাসপাতালগুলো পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশের সর্ববৃহৎ সরকারি হাসপাতাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো উপচে পড়ছে, যেখানে রোগীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মশা নিয়ন্ত্রণ অভিযান জোরদার না করলে সংকট আরও গভীর হতে পারে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা আমাদের শহরগুলোতে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। নির্মাণস্থল, ছাদ, এমনকি ফুলের টবে জমে থাকা পানি প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। যদি আমরা এই আবাসস্থলগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস না করি, তাহলে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো প্রাদুর্ভাব প্রতি বছর আরও বড় আকার ধারণ করবে।

ডেঙ্গু রেকর্ডের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বছর ছিল ২০২৩। ওই বছর ডেঙ্গুতে ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যায় এবং ৩ লাখ ২১ হাজারেরও বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গুকে দ্রুততম বর্ধনশীল বৈশ্বিক হুমকির মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং শহুরে জনাকীর্ণতার ডেঙ্গু পরিস্থিতি কারণে আরও খারাপ হচ্ছে। এর সতর্কতামূলক লক্ষণগুলো - পেটে ব্যথা, বমি, রক্তপাত বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া তাড়াতাড়ি সনাক্ত করার পরামর্শ দেয় সংস্থাটি। বিশেষ করে ভাইরাল জ্বরে 'NSAID' বা স্টেরয়েডের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে।

রোগীরা জানিয়েছেন, আগের মৌসুমগুলোর জ্বরের তুলনায় বর্তমানের অভিজ্ঞতা ভিন্ন।

৪৮ বছর বয়সী সুলতানা পারভীন দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শয্যাশায়ী। আরও পরীক্ষার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে বসে বলে ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমার ডেঙ্গু পরীক্ষা নেতিবাচক ছিল, কিন্তু ব্যথা রয়ে গেছে। আমি ঠিকমতো হাঁটতে পারি না, কারণ আমার গোড়ালিতে খুব ব্যথা হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একসাথে একাধিক জ্বর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতিগুলো মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশে জরুরিভাবে শক্তিশালী হাসপাতাল, বর্ধিত পরীক্ষা এবং বছরব্যাপী মশা নিয়ন্ত্রণ অভিযানের প্রয়োজন।

 

সর্বাধিক পঠিত