গাজীপুর প্রতিনিধি : চলতি অর্থবছরে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। তিনি বলেন, অনেক উদ্যোক্তা আছেন যারা সহায়তা চান। তবে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করে তাদের জন্যই সহায়তা নিশ্চিত করবে সরকার।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) আয়োজিত ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষি সচিব। এ সেমিনার সরকারের ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচির অংশ।
ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে এবারই প্রথম সরকার হিমাগার গেটে আলুর দাম নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম না পায়, তাহলে আমাদের তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এবারই প্রথম ২৫ বছর মেয়াদি একটি কর্মকৌশল প্রণয়নে কাজ করছে। যার লক্ষ্য ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা।
তরুণ প্রজন্মকে ‘অপার সম্ভাবনাময় সম্পদ’ উল্লেখ কৃষি সচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে কৃষির রূপান্তরে।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএআরসির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সদস্য পরিচালক এবং ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচি আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন মোল্লা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএআরসির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুস সালাম।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, এনজিও প্রতিনিধি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ১১ জন তরুণ উদ্যোক্তা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে ছিলেন—কৃষিবিদ মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ (কফি চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ), শাহীদা বেগম (পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন), আব্দুল হালিম (নিরাপদ সবজি উৎপাদন), কৃষিবিদ মোবারক হোসেন (মধু উৎপাদন), প্রকৌশলী মো. মিলন মিয়া (জৈব সার উৎপাদন), মো. ইসমাইল (নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদন), কৃষিবিদ আল মামুন (রঙিন মাছ উৎপাদন), কৃষিবিদ ডা. মো. তাজাম্মুল হক (প্রযুক্তিনির্ভর সেবা), কৃষিবিদ মো. নাজমুস সাকিব (টেকসই প্রযুক্তি বিস্তার), কাজী কাওসার হোসেন প্রিতম (গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ব্যবস্থাপনা) এবং মো. রেজওয়ানুল ইসলাম (সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা)।