ইনিংসের আর দুই ওভার বাকি, দলের রান মোটে ১১৫। এই পরিস্থিতি থেকে আপনি কত রান আশা করতে পারেন? রান রেট একই থাকলে বড়জোর ১৩০, একটু বেশি রান উঠলে ১৫০? কিন্তু সেই পরিস্থিতি থেকে একটা দল তাদের ইনিংস শেষ করল ১৮৬ রান তুলে।
ইনিংসের অর্ধেকের কাছাকাছি রান, আরেকটু স্পষ্ট করে বললে ৩৯ শতাংশ রান এল শেষ ১২ বলে। তার প্রধান কুশীলব সালমান নিজার, শেষ ১২ বলের ১১টিতেই হাঁকালেন ছক্কা। তার এমন ঝড়েই কেরালা প্রিমিয়ার লিগে অবিশ্বাস্য নজির গড়েছে কালিকট গ্লোবস্টার্স।
শনিবার (৩০ আগস্ট) আদানি তিরুবনন্তপুরম রয়্যালসের বিপক্ষে কালিকট গ্লোবস্টার্সের হয়ে খেলতে নেমে তিনি খেলেন মাত্র ২৬ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আসে ১২টি ছক্কা। এই ইনিংসে কোনো চার হাঁকাননি তিনি।
দলের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। প্রথম দিকে কালিকট ছিল বেশ চাপে। ৮ ওভার শেষে স্কোর ছিল মাত্র ৪০-৩। ১৪তম ওভারে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন নিজার, তখন দলের রান ছিল ৪ উইকেটে ৭৬। শুরুতে তাকেও সংগ্রাম করতে হয়েছে অবশ্য। ১৮ ওভার শেষে তার রান ছিল ১৩ বলে ১৭। তখন দলের স্কোর ১১৫-৬।
এরপর শুরু হয় তার ঝড়। ১৯তম ওভারে বল হাতে আসেন অভিজ্ঞ পেসার বাসিল থাম্পি, যিনি আইপিএলে খেলেছেন ২৫ ম্যাচ। তার প্রথম পাঁচ বলে টানা পাঁচ ছক্কা হাঁকান নিজার। শেষ বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক ধরে রাখেন তিনি। ওই ওভারেই ওঠে ৩১ রান।
শেষ ওভারে বল হাতে আসেন অভিজিৎ প্রভীন। প্রথম বলেই ছক্কা খান। এরপর দেন এক ওয়াইড ও এক নো-বল। এরপরের পাঁচটি বৈধ বলেও ছক্কা হাঁকান নিজার। শেষ ওভারে অবিশ্বাস্যভাবে ওঠে ৪০ রান।
মাত্র ১৩ বলে শেষ করেন ৬৯ রান, যেখানে ছিল ১১টি ছক্কা। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৮৬ রানে। পুরো ইনিংসে কোনো চার ছিল না, সব মিলিয়ে ১২টি ছক্কায় ভর করে খেলেন ম্যাচজয়ী এক ইনিংস।
কালিকট গ্লোবস্টার্স শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে তোলে ১৮৬/৬। জবাবে তিরুবনন্তপুরম রয়্যালস ১৭৩ রানে অলআউট হয়। ফলে ১৩ রানে জয় পায় গ্লোবস্টার্স। ম্যাচসেরার পুরস্কারটা সালমান নিজার ছাড়া আর কার হাতে উঠবে বলুন?
এর আগে গত নভেম্বরে সাইয়েদ মুশতাক আলি ট্রফিতেও আলোচনায় এসেছিলেন এই ব্যাটার। তখন মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ভারতের পেসার শার্দুল ঠাকুরকে শেষ ওভারে মেরেছিলেন ৬, ৪, ৬, ৬। তবে আইপিএলে ভাগ্য খোলেনি তাতে। এবার এই অবিশ্বাস্য ইনিংস ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিলেও দিতে পারে সালমান নিজারের!