ধামরাই প্রতিনিধি : সাভার পৌরসভার নামাবাজার এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক (৩৫) পরকিয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ধামরাইয়ে ঘুরতে এসে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বন্ধু মফিজুল ইসলাম (৪০) আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৫ আগস্ট) উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের রুপনগর বুড়ির ভিটা এলাকায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ২ে৬ আগস্ট) ধামরাই থানায় একটি মামলা (নম্বর-৩৪) দায়ের করা হয়। মূল অভিযুক্ত আকাশসহ কয়েকজন পলাতক রয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাভার পৌরসভার উত্তরপাড়া এলাকার হাসান মোল্লার ছেলে রাকিব হাসান হৃদয় (২৩), মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার রামকান্তপুর গ্রামের মহরউদ্দিন মহির ছেলে মজনু শেখ (৪২), ভোলা সদর থানার খেয়াঘাট এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে হোসেন আলী (২০) ও মানিকগঞ্জ সদর থানার দুধবাজার এলাকার মৃত রমজান আলীর ছেলে শাহিন মিয়া ওরফে নাইম (২২)সহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। আসামিরা সাভারের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া থেকে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে বলে জানা গেছে।
নিহত ফজলুল হক রংপুরের কাউনিয়া থানার গদাই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ও আহত মফিজুল ইসলাম রংপুরের বদরগঞ্জ থানার দোয়ানী হাজীপুর মুন্সিপাড়ার মৃত নূরুল হকের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির। তিনি জানান, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রূপনগর বুড়ির ভিটা এলাকার একটি ব্রিজের ঢালে ফজলুল হক ও তার সহকর্মী মফিজুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন। মফিজুল এখনো চিকিৎসাধীন।
তিনি আরও জানান, নিহত ফজলুল হকের সঙ্গে পলাতক আকাশের স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন ফজলুল হক, তার বন্ধু মফিজুল ইসলাম ও আকাশের স্ত্রী মিলে বুড়ির ভিটা এলাকায় ঘুরতে আসেন। খবর পেয়ে আকাশ ও তার সহযোগীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা চালায়। এতে দুজন ছুরিকাহত হন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও আহত ব্যক্তির কাছ থেকে আরও জানা গেছে, সাভার পৌরসভার নামাবাজারের আকাইল ওরফে আকাশের স্ত্রীর সঙ্গে রাজমিস্ত্রি ফজলুল হকের পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। সোমবার রাতে আকাইলের স্ত্রীকে নিয়ে ফজলুল হক ও তার বন্ধু মফিজুল ইসলাম ঘুরতে আসেন ধামরাইয়ের রূপনগরের বুড়ির ভিটা এলাকায়।
খবর পেয়ে আকাশ তার সঙ্গীদের নিয়ে ফজলুল হক ও মফিজুল ইসলামকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন। মফিজুল ইসলাম সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে সাভারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল বলে আটককৃতরা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।