স্টাফ রিপোর্টার : যুক্তরাষ্ট্রসহ নতুন আরও পাঁচটি দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (৯ জুলাই) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর ঢাকা মেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা নতুন করে আরও ৮ দেশের ভোটার কার্যক্রম শুরু করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র, মালদ্বীপ, জর্ডান, দক্ষিণ-আফ্রিকা, ওমান এই পাঁচটি দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি পেয়েছি। অতিদ্রুত অন্য দেশগুলোরও অনুমতি পেয়ে যাব।’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন ৪০টি দেশে ভোটার কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে। বর্তমানে ৯টি দেশে—সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় ১৬টি স্টেশনে এই কার্যক্রম চালু আছে। জাপানে ১৫ জুলাই থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
নতুন পাঁচটি দেশ যুক্ত হওয়ায় ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম ১৫টি দেশে বিস্তৃত হবে। এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে। প্রবাসীরা অনলাইনে আবেদন করে দূতাবাসে গিয়ে ছবি ও আঙুলের ছাপ দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন।
নির্বাচন কমিশন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে—৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। এ দেশগুলো হলো: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, হংকং, মিশর, ব্রুনাই, মৌরিশাস, ইরাক, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, স্পেন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, তুরস্ক ও সাইপ্রাস।
এসব দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী রয়েছেন সৌদি আরবে—৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮ জন। সবচেয়ে কম রয়েছেন নিউজিল্যান্ডে—২ হাজার ৫০০ জন।
ইসির তৈরি সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নয়টি দেশ থেকে ভোটার হওয়ার জন্য মোট আবেদন পড়েছে ৪৭ হাজার ৩৮০টি। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছে ৩ হাজার ৬৯২টি, তদন্তাধীন ২২ হাজার ৫৭৭টি এবং অনুমোদিত ২০ হাজার ৬২৪টি। আরও ৪৮৭টি আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এরই মধ্যে ২৯ হাজার ৫৯৩ জন প্রবাসীর ছবি ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে ইসি। সবচেয়ে বেশি আবেদন এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৯ হাজার ৬৯৮টি) এবং সবচেয়ে কম আবেদন অস্ট্রেলিয়া থেকে (১৮২টি)।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে ২০১৯ সালে কেএম নূরুল হুদা কমিশন প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যে এবং তার আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই কার্যক্রম শুরু হয়। করোনা মহামারির কারণে কার্যক্রম কিছুটা থেমে গেলেও ২০২২ সালে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন তা পুনরায় চালু করে। বর্তমান নাসির উদ্দিন কমিশন সেই কার্যক্রম আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।