ফুলকি ডেস্ক : ঈদুল আজহার পর দুই সিনেমা নিয়ে খবরের শিরেনামে এসেছেন শাকিব খান। সে আলোচনার রেশ থাকতেই উড়াল দেন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে। দেড়মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছেন ঢালিউড মেগাস্টার। সম্প্রতি ফেসবুকে তার একটি পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন চর্চা। সাম্প্রতিক কাজ ও নানা প্রসঙ্গ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র থেকে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় তার সঙ্গে।
প্রশ্ন: কেমন আছেন, যুক্তরাষ্ট্রে শেহজাদের সঙ্গে সময়টা কেমন কাটছে?
উত্তর: আমি ভালো আছি। দু'বছর আগে আব্রামকে নিয়ে ঘুরে ওকে সুন্দর মেমোরি দিয়েছিলাম। দেশে ফিরে কথা দিয়েছিলাম শেহজাদকে নিয়েও ঘুরবো। তাকেও সুন্দর মেমোরি (স্মৃতি) দেব। তাই করেছি। শেহজাদ অনেক ছোট্ট, সময়টাকে ও খুব এনজয় করছে। এরমধ্যে ওর (শেহজাদ) এখানে কিছু কাজও রয়েছে। সেগুলোও প্রসেসিং। আলহামদুলিল্লাহ, শেহজাদ খুব আনন্দে সময় কাটাচ্ছে। এটা ওর জন্য মেমোরেবল (স্মরণীয়) হয়ে থাকবে।
প্রশ্ন: আপনার সিনেমাগুলো যেমন সাফল্য পাচ্ছে, তেমনি পাইরেসি হওয়ার আশঙ্ক্ষা থাকছে! এগুলো ইনটেনশনালি হচ্ছে বলে মনে হয়?
উত্তর: সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদের এব্যাপারে সুদৃষ্টি প্রয়োজন। কঠোর হওয়া প্রয়োজন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। পাইরেসির যারাই করছে বিষয়টি ইনটেনশনালি এবং পরিকল্পিতভাবে করছে মনে হয়! সিনেমাকে পাইরেসি করে আমার একার ক্ষতি করছে না, পুরো ইন্ডাস্ট্রিরই ক্ষতি করছে।
প্রশ্ন: আপনার 'প্রিয়তমা' মুক্তির পর থেকে সিনেপ্লেক্স-মাল্টিপ্লেক্সের দর্শকদের সিনেমা দেখার অভ্যাস দারুণভাবে বেড়েছে কিন্তু বছরের অন্যসময়টাতে সিংগেল স্ক্রিনের দর্শক কমে যাচ্ছে...
উত্তর: প্রযোজক, পরিবেশক এবং হলমালিকদের অনুরোধে এজন্যই তো ঈদ ছাড়াও সিনেমা করছি, যাতে ঈদের বাইরেও সিংগেল স্ক্রিনগুলো চাঙ্গা থাকে। আসলে ভালো সিনেমার মাধ্যমে বিনোদিত করতে পারলে ঈদের বাইরেও দর্শকরাই হলে ফ্যামিলি নিয়ে এসে ফেস্টিভ্যাল ভাইব ক্রিয়েট করেন। এজন্য প্ল্যান করেছি, বছরে তিনটি ভালো সিনেমা করবো এবং করছিও।
প্রশ্ন: গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শোক জানিয়ে আপনার করা পোস্ট ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে কী বলবেন?
উত্তর: দেখুন এখন আমাদের দেশে তো সব সেক্টরে সংস্কার চলছে। বিশ্বাস ছিল আমাদের চিন্তা ভাবনাতেও এই সংস্কার প্রতিফলিত হবে। এমন প্রেক্ষাপটে দলমত নির্বিশেষে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদদের যেমন স্মরণ করা উচিত তেমনি দেশের জন্য অতীতে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন জাতির সেইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরও সম্মান জানানো উচিত। তাদের স্মরণে শ্রদ্ধা প্রদর্শন কোনো রাজনৈতিক দলের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ থাকা উচিত নয়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বেই থাকুক। দুঃখজনকভাবে অনেক সময় আমাদের জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম, সম্মান এবং ত্যাগ শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এটা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। যারা আমাদের দেশ ও মানুষের জন্য জীবনের সর্বস্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। তাদের নিয়ে বিভাজন তৈরি নয়, বরং আমাদের সম্মিলিত একতা ও সংহতি গড়ে তোলা উচিত। দেখুন আমি শাকিব খান কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনো রাজনৈতিক পদ বা দায়িত্বও আমার নেই।
বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার অফার করা হয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র সিনেমার কথা ভেবে আমি সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছি। এমনকি কোনো ধরণের পলিটিক্যাল সুযোগসুবিধা নেইনি। বরং অনেকসময় আমাকেই কর্ম থেকে ব্যক্তিজীবনে পলিটিক্যাল লোক দ্বারা অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সেটা তো সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে কারো অজানা থাকার কথা নয়। সম্প্রতি দেওয়া আমার পোস্ট কাউকে মনঃক্ষুণ্ণ করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। যারা এটাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ন্যারেটিভ খুঁজছেন তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং কর্ম সবসময় দেশ ও দেশের মানুষের জন্য।
প্রশ্ন: দেশে ফিরবেন কবে?
উত্তর: আমার পার্সোনাল কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এগুলো শেষ করে শিগগিরই ব্যাক করবো।