বর্ষা মৌসুমের সবচেয়ে ভয়াবহ সময় পার করছেন পাকিস্তানের করাচি ও ভারতের মুম্বাই শহরের বাসিন্দারা। বুধবার প্রায় দিনভর পানিতে ডুবে ছিল করাচির রাস্তাঘাট। আর মুম্বাইয়ের অধিকাংশ এলাকায় জমে ছিল কোমর সমান পানি।
পাকিস্তান ও ভারতে এ দুটি শহর বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ভারি বর্ষণের কারণে বুধবার সকালেও রাস্তাঘাটে পানি জমে ছিল। বুধবার দুপুরের পর আবার বৃষ্টি শুরু হয়। মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনে এ শহরে অন্তত আটজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বন্ধ আছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ডন বলছে, বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এ শহর প্রায় অচল। অনেক এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। শিল্পাঞ্চলে উৎপাদন থমকে আছে। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ক্ষতির ঝুঁকিতে আছে বহু পুরোনো ভবন। অবস্থা বিবেচনায় বুধবার ছুটি ঘোষণা করে প্রাদেশিক সরকার।
প্রবল বর্ষণে লন্ডভন্ড ঘরের আসবাবপত্র। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায়। ছবি: এএফপি
স্থানীয় সময় বিকেল তিনটায় জারি করা সতর্কবার্তায় পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পরবর্তী দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে করাচি ও আশপাশের বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টি, বজ্রঝড় ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। কিছু স্থানে ভারী বর্ষণেরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়। শহরে বন্যার ঝুঁকি বাড়ার সতর্কবার্তা দিয়ে অধিদফতর বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখোয়ায় টানা পাঁচদিনের মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ভূমিধস অব্যাহত আছে। প্রদেশটিতে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিখোঁজ আছে বহু মানুষ। চলতি সপ্তাহেও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ভারতের মুম্বাইয়েও প্রবল বর্ষণে লাখো মানুষের জীবন ব্যাহত হচ্ছে। সড়ক তলিয়ে গেছে, বাতিল করা হয়েছে ফ্লাইট ও ট্রেন চলাচল। বিবিসি জানিয়েছে, শহরের বহু এলাকা বুধবার কোমর সমান পানিতে ডুবে ছিল। ভিডিওতে দেখা গেছে, বাসিন্দাদের কয়েকজন জলাবদ্ধ রাস্তায় সাঁতার কাটছেন। নালার ময়লা ভাসছে পানিতে।
মহারাষ্ট্রে বছরের এমন সময়ে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু গত এক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিপাত বেশ ভোগাচ্ছে বাসিন্দাদের। এই সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।