গাইবান্ধা সংবাদদাতা : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের ‘মওলানা ভাসানী সেতু’। তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা থেকে গাইবান্ধার দূরত্ব অন্তত ১০০ কিলোমিটার কমে এসেছে। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সৌদি অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের ঢল নামে। উচ্ছ্বাসে ভাসেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা, যারা এতদিন নৌপথেই যাতায়াত করতেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদর সড়ক পর্যন্ত নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ১,৪৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯.৬০ মিটার। প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার কাঠামোর এ সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা ৩১টি এবং লেন সংখ্যা দুটি।
৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সরকার, সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওফিড) যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করে। এর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের শিল্প, কৃষিজাত পণ্য পরিবহন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই নয়, শিক্ষা বিস্তার, কর্মসংস্থান এবং আঞ্চলিক উন্নয়নেও সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য এলাকা থেকে ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরসহ কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের দূরত্ব কমবে ৪০-৬০ কিলোমিটার।
গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী জানান, উদ্বোধনের আগে থেকেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। দুপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সেতুটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কাজের সূচনা হলেও নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ণোদ্যমে নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুর দুই পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী নদী শাসন এবং প্রায় ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।