সোমবার, 4 আগস্ট 2025
MENU
daily-fulki

ইসি মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান, সুযোগ দিচ্ছি সংশোধনের: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

ফুলকি ডেস্ক : বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, দিন দিন দেখতে পাচ্ছি– ইসির অধিকাংশ অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি পরা পোশাক এবং বাকি যতটুকু যারা আছে, তারা দলীয় পোশাকে আবৃত। তবে আমরা এখনও ইসিকে ভুল ধরিয়ে দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি। 

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির  দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা। 

 

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আর এখন কেউ ভোট দিতে চাইলেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে ইসি। আগে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে; এবার নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। 

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দল ছাড়া অন্য কেউ ভোট নিতে আসে, তাহলে সেখানে তারা (ইসি) সমস্যার সৃষ্টি করবে– এমন পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। আমরা যতই এই নির্বাচন কমিশনকে দেখতে পাচ্ছি, ততই বুঝতে পারছি, এটা মেরুদণ্ডহীন কমিশন। 

এই কমিশনের অধীনে নির্বাচন হলে শেষ পর্যন্ত ভোটে যাবেন কিনা– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘জনগণ যদি আমাকে ভোট দিতে আসে আর যদি আমাকে ভোট নেওয়ার জন্য বাধাগ্রস্ত করা হয়, সেখানে আমি কেন অংশগ্রহণ করব? গত ১৫ বছরে তো অনেকে ভোটে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা এখনও এন্ডিং প্রসেসে আসেনি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত তাদের (ইসি) সঙ্গে দেখা করছি, কথা বলছি। তাদের ভুলগুলো দেখিয়ে দিচ্ছি, সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি। কিন্তু ইসি যদি সামরিক ও দলীয় উর্দি পরে তার মেরুদণ্ড বিক্রি করে দিতে চায় এবং ভোট না দিতে দেয়, তাহলে আমরা ফাইনালি হয়তোবা এই সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য হব।’ 

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আমরা এখনও সুযোগ দিচ্ছি, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এবং তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসুক। দেশকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেওয়ার জন্য সচেষ্ট হোক। আমরা এখনও ধৈর্যহারা হইনি। 

এর আগে সিইসির সঙ্গে বৈঠকে দলের নিবন্ধন আবেদনের ত্রুটি সংশোধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয় এনসিপির প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি পুনর্ব্যক্তও করেন তারা। এ বিষয়ে প্রবাসীদের অবহিত করতে প্রতি ১৫ দিন পর পর অনলাইন ব্রিফিং করা হবে বলে নিশ্চিত করেন সিইসি। 

দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ বরাদ্দ দেওয়ার দাবি-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন বলেন, আমরা মনে করি, শাপলা পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই। ইসি চাইলে যে কোনো সময় নিবন্ধন বিধিমালা সংশোধন করে এটা দিতে পারে। 

এর আগে এনসিপিসহ ১৪৪টি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সব দলকে চিঠি দেয় ইসি। এসব কাগজপত্র জমা দেওয়ার রোববারই ছিল শেষ দিন। 

মন্তব্য করতে নারাজ ইসি 
‘নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন’– এনসিপির এমন অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি নির্বাচন কমিশনাররা। নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমান মাছউদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কাজেই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’ 

ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এটা তাদের (এনসিপি) কাছেই জিজ্ঞেস করুন, যারা এটা বলেছে, তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’

সর্বাধিক পঠিত