স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনসহ এখন পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। এছাড়া এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাত সোয়া ৮টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ১৯তম দিনের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯তম দিনে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে পুলিশের আইনানুগভাবে ও প্রভাবমুক্ত হয়ে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন নিশ্চিতকরণ, পুলিশ বাহিনীর যেকোনও সদস্যের উত্থাপিত অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণের উদ্দেশ্যে এ কমিশন কাজ করবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের অব্যাহত আলোচনায় এ পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া ৭টি বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু নিষ্পত্তি হয়নি।
বাংলাদেশ পুলিশ কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি—যার বয়স ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে নয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের নিচে এবং ৬২ বছরের ঊর্ধ্বে নয়, এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা হবেন কমিশনের সদস্য সচিব।
এ কমিশনের অন্যান্য সদস্য হবেন জাতীয় সংসদের সংসদ নেতার প্রতিনিধি, বিরোধীদলীয় নেতার প্রতিনিধি, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের একজন করে প্রতিনিধি, সচিব পদমর্যাদার নিচে নয়, এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা (জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন), জেলা জজ পদমর্যাদার নিচে নয়—এমন একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা অথবা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তালিকাভুক্ত একজন আইনজীবী, যার আইন পেশায় ন্যূনতম ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং একজন মানবাধিকার কর্মী—যার দেশে বিদেশে নিবন্ধিত মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থায় ন্যূনতম ১০ বছরের কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ২ জন নারী সদস্য থাকবেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, একজন ব্যক্তি তার সমগ্র জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন। এ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে।
এছাড়া তিনি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সমাপ্ত হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সোমবার (২৮ জুলাই) কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় সনদের খসড়া পাঠানো হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।